রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

কোথাও কোনো সুখবর নেই

বিশ্বে বাড়ছে মৃত্যু, যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ইউরোপের অবস্থা অপরিবর্তিত, সেপ্টেম্বরের আগে আসছে না ভ্যাকসিন

প্রতিদিন ডেস্ক

কোথাও কোনো সুখবর নেই

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো সুখবর নেই। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কেবলই বেড়ে চলেছে। একই সঙ্গে ভাইরাস ঢুকে পড়ছে নতুন নতুন এলাকায়। ভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় থাকা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের পরিস্থিতিও অপরিবর্তিত। ভয়াল এ দুঃসময় থেকে মুক্তি পেতে যে রোগ প্রতিরোধক ভ্যাকসিন ও মেডিসিন প্রয়োজন- তা তৈরিতে গবেষক ও বিজ্ঞানীরা ব্যাপকভাবে তৎপর থাকলেও স্বাভাবিক কারণেই তা সহসা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সোয়া ১৭ লাখ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার। আগের দিনের মতো এ দিনও মৃত্যু ও আক্রান্তের মিছিল ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের দেশগুলোতে।

মৃতের সংখ্যা লাখ ছাড়ানোর আশঙ্কা হোয়াইট হাউসের : নভেল করোনার জেরে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত রয়েছে মার্কিন        যুক্তরাষ্ট্রে। গত শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ২ হাজার ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক দিনে মৃত্যু সংখ্যার নিরিখে যা এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ। গত চার মাসে বিশ্বের আর কোনো দেশে এক দিনে এত মানুষের প্রাণহানির রেকর্ড নেই। মৃত্যুর নিরিখে এখনো পর্যন্ত বাকি সব দেশের চেয়ে এগিয়ে আছে ইতালিই। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৮৪৯। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যু সংখ্যা এসে ঠেকেছে ১৮ হাজার ৭৭৭-এ। যে হারে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে চলেছে ট্রাম্পের দেশে-তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যায় ইতালিকে ছাপিয়ে যাওয়ার সময় এসে গেছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এখন পর্যন্ত সেখানে ৫ লাখ ৩ হাজার ১৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৯ হাজার ১৩২ জন। এর মধ্যে নিউইয়র্কের পরিস্থিতিই সবচেয়ে সংকটজনক। সেখানে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ৮০০ জন। তার পরেই রয়েছে নিউজার্সি। ৫৪ হাজার আক্রান্তের মধ্যে ২ হাজার প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। তবে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে  হোয়াইট হাউস টাস্কফোর্স। তাদের আশঙ্কা, করোনার প্রকোপে দেশে ১ থেকে ২ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে। এদিকে পরিস্থিতি খানিকটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এসেছে ইতালিতে। শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৩২১। ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। এদিন সকাল পর্যন্ত স্পেনে ১৬ হাজার ৮১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা ঠেকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ২৭৩-এ। জার্মানিতে এদিন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৩৬ জন প্রাণ হারান। আক্রান্ত হন ১ লাখ ২২ হাজার ১৭২ জন। অন্যদিকে করোনার প্রকোপ কাটিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে চীন। শুক্রবার নতুন করে ৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত হন সেখানে। ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৪ জন প্রাণ হারান সে দেশে।

প্রাণ গেল ব্রিটিশ অভিনেত্রীর : করোনা আবারও হানা দিয়েছে চলচ্চিত্র অঙ্গনে। এই দফায় করোনাজনিত জটিলতায় মারা গেলেন ব্রিটিশ অভিনেত্রী হিলারি হিথ। ‘উইচফাইন্ডার জেনারেল’ নামের ভৌতিক ছবিতে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া হাগ গ্রান্ট ও অ্যালান রিকম্যান অভিনীত ‘অ্যান অফুলি বিগ অ্যাডভেঞ্চার’, ও ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া গ্যারি ওল্ডম্যানের ‘নিল বাই মাউথ’ ছবিতে অর্থলগ্নি করেন তিনি। যুক্তরাজ্যের লিভারপুলে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রীর ১৯৬৮ সালে মাইকেল রিভস পরিচালিত ভৌতিক ছবি ‘উইচফাইন্ডার জেনারেল’-এর মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে।

পিপিইর অভাবে পলিথিন পরছেন যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের ডাক্তার-নার্সরা : খবরে বলা হচ্ছে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কেটে গেছে ১০৪ বছর। কিন্তু আমেরিকার মনোভাবে বিশেষ কোনো পরিবর্তন আসেনি। সেই সময়েও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার সাজসরঞ্জাম ছাড়াই সেনাকে যুদ্ধে পাঠিয়েছিল আমেরিকা। এবারও ঘটল ঠিক তাই। তবে এবার যুদ্ধ কোনো দেশ নয়, করোনার বিরুদ্ধে। আর ফ্রন্টলাইনে রয়েছেন ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনার বিরুদ্ধে যারা দিন-রাত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের নিরাপত্তার জন্য আমেরিকার ওয়াশিংটনের মতো শহরে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পিপিই সরঞ্জাম। একই অবস্থা নিউইয়র্কেও। বাধ্য হয়ে ডাক্তার এবং নার্সিং স্টাফদের পরতে হচ্ছে ময়লা ফেলার পলিথিন ব্যাগ। নিউইয়র্ক শহরের বহু নার্স সোশ্যাল মিডিয়ায় এর ছবিও পোস্ট করেছেন। একই অবস্থা যুক্তরাজ্যেও। লন্ডনেও চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রায় কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই দিনের পর দিন কাজ করে যাচ্ছেন। লন্ডনের একটি হাসপাতালের প্রায় ৫০ শতাংশ কর্মীর শরীরে পাওয়া গেছে করোনা সংক্রমণ। দেশটিতে এরই মধ্যে ১৭ জন ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পিপিইর অভাবে সেখানেও ময়লা ফেলার পলিথিন ব্যাগ পরার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, নয়তো বলা হচ্ছে- রোগী দেখার সময়ে শ্বাস বন্ধ করে রাখতে। এই চরম অব্যবস্থার ফলে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ।

ব্রিটিশ ভ্যাকসিন মিলবে সেপ্টেম্বরে : যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট ও তার দল আশা করছে করোনার প্রতিষেধক তৈরিতে অনেকটাই সফলতা দেখছেন তারা। আগামী সেপ্টেম্বরে এই প্রতিষেধকের কার্যকর প্রয়োগ করা সম্ভব হবে, যা ৮০ ভাগ সফল হবে বলে আশা করেন তারা।

মেইল অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক গিলবার্ট আশাবাদী যে, আগামী দুই সপ্তাহের ভিতর টিকা মানুষের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হবে। তারপর সেপ্টেম্বর নাগাদ তা কার্যত প্রয়োগ করা সম্ভব হবে। ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল টিকা তৈরির গবেষণায় যারা এগিয়ে যাবে তাদের টিকা উৎপাদনে সরকার অর্থায়ন করবে। আগে বলা হয়েছিল টিকা বাজারে আনার জন্য উৎপাদন করা অন্তত ১৮ মাস সময় লেগে যেতে পারে। অধ্যাপক গিলবার্ট এখন বলছেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাক মতো কাজ করলে আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদই কার্যকর টিকা আনা যাবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে যে টিকা নিয়ে কাজ করছি সেটি কার্যকর হবে এর সম্ভাবনা অনেক বেশি। আমি ৮০ শতাংশ আশাবাদী যে টিকাটি সফল হবে।’

এইচসিকিউ পরীক্ষা শুরু আমেরিকায় : ভারতের কাছ থেকে আদায় করা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (এইচসিকিউ) কভিড-১৯-এর চিকিৎসায় আদৌ কতটা কার্যকর- সেই পরিসংখ্যানই এখন পর্যন্ত নেই আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের কাছে। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া জানিয়েছে, এজন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচশরও বেশি রোগীর ওপর এটি পরীক্ষা করবে তারা। গত বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় টেনেসির ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের রোগীদের ওপর এর প্রয়োগ করা হয়েছে। ম্যালেরিয়া ও কিছু বাতের ক্ষেত্রে এইচসিকিউ কার্যকর হলেও এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, ক্ষেত্রবিশেষে যা গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে আমেরিকার অনেক হাসপাতাল ইতিমধ্যে কভিড-১৯-এর প্রাথমিক পর্যায়ে এটি প্রয়োগ করছে। মার্কিন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবার নিশ্চিত হতে চান পরীক্ষা ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে।

প্লাজমা থেরাপি শুরুর পথে ভারত : করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় এবার নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত। নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতির নাম প্লাজমা থেরাপি। যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু দিন ধরেই এই পদ্ধতি রোগীদের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে মার্কিন একটি জার্নালেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগে বেশ সুফল পাওয়া যাচ্ছে। এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে ভারতও। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্লাজমা থেরাপি পদ্ধতিতে কভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা কোনো রোগীর রক্তের প্লাজমা আক্রান্তের দেহে ইনজেক্ট করা হয়। ফলে ওই রোগীর দেহেও অ্যান্টিবডি গড়ে ওঠে, যা করোনা প্রতিরোধে সহায়তা করে। এই পদ্ধতির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল খুব তাড়াতাড়িই করতে চাইছেন ভারতীয় চিকিৎসকরা। তবে করোনায় আক্রান্তদের ওপর প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত অনেক দিন আগেই নিয়েছে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। করোনাভাইরাসের প্রাণঘাতী ভাইরাল স্ট্রেন সার্স-কভ-২-কে জব্দ করার মতো কোনো টিকা বা ওষুধ এখনো বাজারে আসেনি। তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এই প্লাজমা থেরাপিকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিশ্বের অনেক দেশই।  বিজ্ঞানীদের দাবি, দাতার রক্তরসে যদি শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তাহলে আক্রান্তের সংক্রমণ ৩-৭ দিনে সারতে পারে। একজন দাতার প্লাজমা থেকে কম করে দুজন রোগীর চিকিৎসা হতে পারে। জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের মলিকিউলার বায়োলজির প্রধান আরতুরো ক্যাসাডাভেল বলেন, প্লাজমা থেরাপিতে সংক্রমণ সারানোর উপায় আছে। সেরে ওঠা ব্যক্তিরা যদি প্লাজমা দান করতে এগিয়ে আসেন, তাহলে বাঁচানো যাবে বহু মানুষকে। নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতাল, ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগোতে প্লাজমা থেরাপির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে।

হুর ভাষ্য, লকডাউন-কারফিউ তুলে নিলে অবস্থা হবে ভয়াবহ : করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে লকডাউন, কারফিউর মতো কড়াকড়ি ব্যবস্থা শিথিল করার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলেছে, এমনটি করা হলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। প্রাণঘাতী রূপে আবার জেঁকে বসতে পারে কভিড-১৯ এর সংক্রমণ। শুক্রবার জেনেভায় করোনা সংক্রান্ত এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম ঘেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ইউরোপের কিছু দেশে (স্পেন, ইতালি) এই মহামারী আগের তুলনায় কিছুটা শ্লথ গতিতে বিস্তার করছে। তবে এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন, কারফিউর মতো কড়াকড়ি ব্যবস্থা শিথিল করলে এই সংক্রমণের ভয়াবহ পুনরুত্থান ঘটতে পারে।’

দেবী শেঠির ভাষ্য : ধাপে ধাপে লকডাউন তুলতে হবে : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভারতজুড়ে চলছে লকডাউন। সে লকডাউন তুলে নিতে হবে। ধীরে ধীরে লকডাউনের কারণে তৈরি হওয়া সীমাবদ্ধতাও শিথিল করতে হবে বলে জানালেন দেশটির বিশিষ্ট চিকিৎসক দেবী শেঠি।  গত বৃহস্পতিবার বেনেট বিশ্ববিদ্যালয়/টাইমস স্কুল অব মিডিয়া আয়োজিত ‘গ্লোবাল অনলাইন কনফারেন্স অন কভিড-১৯ : ফলআউট অ্যান্ড ফিউচার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন দেবী শেঠি।

 ‘করোনার প্রকোপ কমাতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশে লকডাউন জরুরি ছিল। এমন অবস্থায় দেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে। মূলত সেই দিকটাকেই লক্ষ্য করে এবার লকডাউন তুলে নিতে হবে’ বলে দাবি করেন ভারতের নারায়না হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাক্তার দেবী শেঠি। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউনের কারণে দেশে যেসব সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, সেগুলোও শিথিল করতে হবে ধীরে ধীরে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বলতেই পারি যে মৃত্যুর হার অন্ততপক্ষে ৫০ শতাংশ কমিয়ে ফেলেছি কেবল এই লকডাউনের কারণেই। কারণ অনেক তাড়াতাড়িই ভারত লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুনিয়ার অনেক দেশ এরকম প্রাথমিক পর্যায়েই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আমাদের উচিত ধারাবাহিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে লকডাউন প্রত্যাহার করা এবং বর্তমান পরিস্থিতি থেকে সুরাহা পেতে তথাকথিত নীতি প্রণয়নের রাস্তায় না হাঁটা। হটস্পট ব্যতিরেকে কোনো স্বাস্থ্যভিত্তিক কারণে লকডাউন জারি রাখার আর কোনো মানে হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কর্ণাটকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম যাতে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট শুরু করা হয়, কিন্তু তা ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাতে হয় সেটাও নিশ্চিত করা উচিত। পাশাপাশি দোকানগুলোও যাতে সকাল থেকেই আরও বেশ কিছুক্ষণ খোলা থাকে, যাতে বেশি মানুষ সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ভিড় না করেন।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর