রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে মোদির ভিডিও কনফারেন্স

ভারতে লকডাউন ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতজুড়ে চলমান লকডাউনের মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো দেওয়া হয়নি। আগে বলা হয়েছিল, ২১ দিনের লকডাউন চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। লকডাউনের মেয়াদ আবারও বাড়ানো হবে কিনা- এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল সকালে ভারতের রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেছেন। সে কনফারেন্সে প্রায় সব মুখ্যমন্ত্রীই লকডাউন বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, লকডাউনের      সময়সীমা বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দু-এক দিনের মধ্যেই আসছে। কনফারেন্স শেষে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আরও দুই সপ্তাহ লকডাউনের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের প্রতিপাদ্য ছিল “জান হায় তো জাঁহা হায় (জীবন থাকলে পৃথিবী)” আর এখন আমাদের লক্ষ্য হলো “জান ভি জাঁহা ভি (জীবন ও পৃথিবী দুটোই চাই)”।’

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা যায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে. চন্দ্রশেখর রাওকে।

ভিডিও কনফারেন্সে মাস্ক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে হাতে তৈরি সুতির কাপড় মুখে জড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কারও সার্জিক্যাল মাস্ক, কারও আবার সাদা পরিষ্কার কাপড় মুখে জড়িয়ে ভিডিও কনফারেন্সে দেখা যায়। বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের জন্য আমি সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত। করোনা সম্পর্কিত যে কোনো বিষয় নিয়ে যে কোনো মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে কথা বলতে ও পরামর্শ দিতে পারেন। করোনায় মৃত্যু রুখতে, দেশকে বাঁচাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।’

ভিডিও কনফারেন্স থেকে দিল্লি, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীরা সবাই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে কেন্দ্রের কাছে বিশেষ আর্থিক সহায়তার দাবি জানান মমতা ব্যানার্জি। অন্যদিকে কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেওয়ার আবেদন জানান পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়া করোনা পরীক্ষার জন্য বিশেষ কিট দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। একই দাবি জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে এ সংটজনক মুহূর্তে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কেন্দ্রের কাছে সহায়তার আরজি জানান কেজরিওয়াল।

ইতিমধ্যেই বুধবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংসদীয় নেতাদের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্স করেছেন নরেন্দ্র মোদি। সেই বৈঠকেও লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের তরফে জোরদার দাবি তোলা হয়েছে।

এদিকে সংক্রমণ মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গাকে ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করে সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। হাওড়া, নদীয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, কালিম্পং, কলকাতা, সল্ট লেকের ‘হটস্পট’ চিহ্নিত এলাকায় কারও প্রবেশ বা বেরোনো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্ধ থাকবে বাজার, দোকানপাট, রাস্তা।

সর্বশেষ খবর