সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১২ বাংলাদেশির মৃত্যু

লাবলু আনসার, নিউইয়র্ক

করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্ক, ফ্লোরিডা, ওয়াশিংটন মেট্রো এবং পেনসিলভেনিয়ায় গত শনিবার আরও ১২ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।

তারা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আসাদ ইকবাল (৫৫), শরীয়তপুরের রতন শিকদার (৬৩), চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর চরখিজিরপুরের আবদুল মান্নান (৬০), সিলেটের বিয়ানীবাজারের এনাম হোসেন (৪৬), জকিগঞ্জের হায়দ্রাবন্দ গ্রামের আজিজুন্নেসা (৬৪), বাকেরগঞ্জের আবুল হোসেন (৬৪), নিউইয়র্কে সিলেট সদর সমিতির সভাপতি এস্টোরিয়া নিবাসী দেওয়ান শাহেদ চৌধুরীর বড়ভাই দেওয়ান আফজাল চৌধুরী (৭২), ব্রঙ্কস নিবাসী ও সিলেটের ওসমানীনগরের সন্তান খন্দকার মোসাদ্দেক আলী সাদেক (৬৫), ওয়াশিংটন ডিসি এলাকার খ্যাতনামা সমাজকর্মী-চিকিৎসক এম এ মান্নান (৮১), মায়ামীতে বসবাসরত সিরাজগঞ্জের সন্তান মোহাম্মদ হক সুইট (৫০) এবং পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের হ্যাটফিল্ড সিটির অধিবাসী এবং পাবনার সন্তান পূর্ণচন্দ্র সাহা (৮০)। হাসপাতাল এবং পারিবারিক সূত্রে এসব মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। নিউইয়র্কের ওজনপার্ক প্রবাসী বোরহানউদ্দিন বাবুলের স্ত্রীও ১১ এপ্রিল মারা গেছেন। নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিস থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানানো হয়েছে, ১১ বাংলাদেশিসহ ৩৯২ জনকে সিটির পাঁচটি হোটেলে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ‘হোমলেস’ হিসেবে এদের বিভিন্ন স্থান থেকে অ্যাম্বুলেন্স এসে হাসপাতালে নিয়েছিল। পরীক্ষার পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হলে তাদের ম্যানহাটানের ৫২ উইলিয়াম স্ট্রিটে দ্য র‌্যাডিসন হোটেল, কুইন্সের ১৮৩-০২ জ্যামাইকা এভিনিউতে জ্যামাইকা হোটেল (কমফোর্ট ইন), ব্রুকলিনে ২৩৫-২৪ এভিনিউতে হাওয়ার্ড জনসন হোটেল এবং কুইন্সে ৩৮-৪২, ১১ স্টিটে টাউন প্ল্যাস হোটেলে ‘কোয়ারেন্টাইন’-এ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সিটি সরবরাহকৃত খাবার খাচ্ছেন হোটেল কক্ষে অবরুদ্ধ থেকে। বাংলাদেশির মধ্যে ৪ নারী ও একজন কবিও রয়েছেন বলে জানা গেছে। করোনাভাইরাসের গতি-প্রকৃতির আলোকে ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংকালে সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো জানান, আরও ৬ হাজার  হোমলেসের অধিকাংশই করোনায় আক্রান্ত। তাদের সিটি কর্তৃক ভাড়াকৃত হোটেল কক্ষে স্থানান্তর করা হচ্ছে সোমবারের মধ্যে। কুইন্স, ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন, ম্যানহাটান এবং লং আইল্যান্ড এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ শতাধিক বাংলাদেশি চিকিৎসা নিচ্ছেন, যার মধ্যে শতাধিক প্রবাসীর অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। তারা আগে থেকেই নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন, এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। 

খাদ্য সহায়তা : নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে বাংলাদেশিদের পরিচালনাধীন সর্ববৃহৎ মসজিদ ‘জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার’-এর পরিচালনা পর্ষদের সেক্রেটারি মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী জানান, মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন কিংবা চলমান অবরুদ্ধ অবস্থায় বাসার বাইরে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী ক্রয়ে সক্ষম হচ্ছেন না- এমন অসহায় প্রবাসীদের জন্য আমরা পরিবার পিছু ১০০ ডলার করে দিচ্ছি। এ অর্থে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করে সংশ্লিষ্টদের বাসার সামনে রাখছি। আর যারা নিজেরাই গ্রোসারিতে যাচ্ছেন, তাদের নগদ ১০০ ডলার করে দেওয়া হচ্ছে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের খাদ্যসামগ্রী ভিকটিমদের বাসার সামনে পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করছেন নিউইয়র্ক অঞ্চলে দক্ষিণ এশিয়ানদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ড্রাম’র সংগঠক কাজী ফৌজিয়া এবং ‘সাউথ এশিয়ান ফান্ড ফর এডুকেশন, স্কলারশিপ অ্যান্ড ট্রেনিং’ নামক আরেকটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান মাজেদা উদ্দিন।

সর্বশেষ খবর