শিরোনাম
সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সেপ্টেম্বরে প্রথম ভ্যাকসিন নিয়ে যত আশাবাদ

প্রতিদিন ডেস্ক

মহামারী করোনাভাইরাসের একটি ভ্যাকসিন আগামী সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ তৈরি হতে পারে বলে সুখবর দিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট। গত শনিবার যুক্তরাজ্যের দ্য টাইমস পত্রিকাকে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে এ আশার কথা শোনান তিনি।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট কভিড-১৯ রোগের ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে জোর প্রচেষ্টা চলছে। বৈশ্বিক এ প্রচেষ্টায় অক্সফোর্ডের সারাহর দলও যুক্ত। সারাহ বলেছেন, কভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় তার গবেষণা দলের বানানো ভ্যাকসিন যে কাজ করবে, সে ব্যাপারে তিনি ৮০ ভাগ আত্মবিশ্বাসী। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তারা মানুষের ওপর তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা চালাবেন বলেও জানান তিনি। তিনি উল্লেখ করেন, ভ্যাকসিনটি দ্রুত তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে তার দল। তিনি সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করছেন। সারাহ আরও বলেন, সবকিছু ঠিকমতো এগোলে সেপ্টেম্বর নাগাদ ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে। এ ভ্যাকসিন কভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় কাজ করবে। প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৫টি কোম্পানি ও একাডেমিক প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছে। এগুলোর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান মানুষের ওপর প্রয়োগ শুরু করেছে। তিনটি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলক প্রয়োগের খুব কাছাকাছি চলে আসার কথা বলেছে।

বাংলাদেশেও গবেষণা : বাংলাদেশের ওষুধ ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের একটি ওষুধ এখনো ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের স্পেসিফিক ওষুধ সারা পৃথিবীতেই আবিষ্কার হয়নি। তবে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। এরকম একটা ওষুধ হচ্ছে ফ্যাভিপিরাভির, যা কিনা ‘অ্যাভিগান’ নামে জাপানের ফুজি কোম্পানির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান তোয়ামা তৈরি করেছিল। এ ওষুধ ইনফ্লুয়েঞ্জায় ব্যবহৃত হয়।’ এ ওষুধটি চীন ব্যবহার করছে, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে ট্রায়াল হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় ভালো ফল পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের বিকনও এ ওষুধটি তৈরি করেছে, ওষুধ আমাদের কাছে রেখেছি। যদি কখনো কোনো ওষুধ দিয়ে ট্রায়াল করা হয়, তখন আমরা কোথায় পাব- সে জন্যই এটা একটা প্রস্তুতি।’

হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন হৃদরোগে ঝুঁকিপূর্ণ : বিভিন্ন গবেষণায়ে দেখা গেছে, ‘হাইড্রোকুইনন’ নামে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ কার্যকর হচ্ছে। আর হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ওষুধের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ বর্তমানে ভারত। এদিকে গবেষকরা সর্বশেষ তথ্যে জানাচ্ছেন, এ ওষুধের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এমনকি এটি হৃদরোগের ক্ষেত্রে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সের ওষুধ নিরাপত্তা সংস্থা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যালেরিয়ার ওষুধ কভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনকে কার্যকরী মনে হলেও এটি হার্টের সমস্যা আছে এমন রোগীদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। চিকিৎসকের সার্বিক তত্ত্বাবধান ছাড়া এ ওষুধ ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।

তারা আরও বলছেন যে, করোনার চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এলেও সফল কি না, তা এখনো প্রমাণিত হয়নি।

সর্বশেষ খবর