শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মন্দা মোকাবিলায় তিন বছরের পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মন্দা মোকাবিলায় তিন বছরের পরিকল্পনা

কে কোন দল করে তা না দেখে সঠিকভাবে ত্রাণ বিতরণ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যার অবস্থা খারাপ, দুস্থ, যার ঘরে খাবার নেই, তার ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মন্দা এলে যেন মোকাবিলা করতে পারি, সেজন্য প্রণোদনা প্যাকেজ দিচ্ছি। তিন অর্থবছরের পরিকল্পনা নিয়েছি।

গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা বিভাগের নয়টি জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সিভিল সার্জনসহ চিকিৎসক, সশস্ত্র বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলা ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিল। করোনায় সবার সুরক্ষা প্রয়োজন কিন্তু আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ‘অমানুষ’ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। সাবধানে থাকতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, অমানবিক আচরণ করতে হবে। সেটা আপনারা করবেন না।  গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের প্রশাসন এবং পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট সবাই অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ডাক্তার-নার্সসহ চিকিৎসা ক্ষেত্রে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি কারণ, জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে তারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেশের ১৭টি জায়গায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী সবার জন্য পিপিইসহ সব রকমের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোগীদের জন্য চিকিৎসা এবং বেডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কোথাও করোনা আক্রান্তের খবর পেলেই ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ১৬ হাজার ৬১৬ পিস পিপিই সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ লাখ ৫৮ হাজার ২৯৪টি বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ আছে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩২২ পিস এবং প্রতিনিয়ত তাঁর সরকার এটি সংগ্রহ করে যাচ্ছে।

যার ঘরে খাবার নেই তার ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে : আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কে কোন দল করল, কে আমার পক্ষে, কে আমার পক্ষে না, কে আমার ভোটার, কে আমার ভোটার না; তা দেখার দরকার নেই। যার অবস্থা খারাপ, যার ঘরে খাবার নেই, তার ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। আমি চাই আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মী সেই মানসিকতা নিয়ে কাজ করবে এবং সেভাবেই তালিকা করবে। তাই আবারও বলি দল দেখে নয়, দলমত নির্বিশেষে তালিকা করুন। এটি আমার পার্টির নেতা-কর্মীর কাছে নির্দেশ। শেখ হাসিনা বলেন, এরই মধ্যে নির্দেশ চলে গেছে যে, সব জায়গায় কমিটি করে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য। যাতে সঠিক নামটা আসে। নইলে অনেক সময় দেখা যায়, নির্বাচিত প্রতিনিধি বা তারা কয়েকজন বাছাই করা লোককে দিলেন বা কমিশনার তার ভোটারদের দিলেন। এই বাদটা যেন না পড়ে এবং প্রশাসনে যারা কাজ করবেন বা ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা তারাও এটি নজরদারিতে রাখবেন। তিনি বলেন, একটি মানুষও যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়। আল্লাহর রহমতে প্রচুর খাবার আছে। তাছাড়া আবার ধান কাটার সময় হয়েছে। প্রচুর আলু হচ্ছে। ওষুধপত্র কোনো কিছুর অভাব নেই।

আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড দেওয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে ৫০ লাখ চরম দরিদ্র ও দুস্থ মানুষ সরকারের রেশন কার্ড সুবিধার আওতায় প্রতি কেজি ১০ টাকায় চাল পাচ্ছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা আরও ৫০ লাখ লোককে এই সুবিধার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্ব আতঙ্কগ্রস্ত। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত। একটা অদৃশ্য শক্তি। তাকে কেউ চোখে দেখে না। তার জন্য পুরো বিশ্ব একসঙ্গে চলে এসেছে, অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এর ফলে অর্থনৈতিক মন্দা বা দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। দেশকে আমরা কীভাবে রক্ষা করব সেটা ভাবতে হবে। অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে বিশেষ করে যারা দিনমজুর। সেটা মাথায় রেখে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হলে অমানুষে পরিণত হয়। যখন আমরা দেখি মায়ের একটু সর্দি কাশি জ্বরের কারণে ছেলে, ছেলের বউ, ছেলে-মেয়ে মিলে এমনকি তার স্বামী পর্যন্ত তাকে নিয়ে জঙ্গলে ফেলে আসে! এর চেয়ে অমানবিক কাজ আর হতে পারে না। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। এ রকম আরও বহু কাহিনী আমরা শুনি! বাংলাদেশে এরকম আচরণ কেন ঘটবে? করোনা আক্রান্ত সন্দেহে মানুষকে ঘর থেকে বের করে দেবে, আক্রান্ত ডাক্তারকে এলাকাছাড়া করবে, এরকম হতে পারে না। এই অমানবিক হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারও যদি সন্দেহ হয়, তাহলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হায়াত-মওত আল্লাহর হাতে। যে কোনো মানুষ যে কোনো দিন মরতে পারে। আজকে আমি কথা বলছি, এখানে বসেও মরতে পারি। বা যে কেউ মরতে পারে। এটা কেউ বলতে পারে না যে, আমি বেঁচেই থাকব। একমাত্র আল্লাহ বলতে পারেন। ভাইরাস দেখা দিল, এ রকম একটা ভাইরাস এসে সারা বিশ্বকে এ রকম ঘরবন্দী করে ফেলবে! এটা কী কেউ ভেবেছে। সারা বিশ্বে অনেক শক্তিশালী দেশ, তাদের শক্তির দাপটে পৃথিবী অস্থির। এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের লড়াই, যুদ্ধ, সংঘাত। অস্ত্রের মহড়া আমরা দেখেছি। সেই অস্ত্র, অর্থ কোনো কাজে লাগেনি। কোনো কাজে লাগবে না। সেটাই প্রমাণ করে দিল এই করোনাভাইরাস। প্রবাসীদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে আমরা যেভাবে মানুষকে সুরক্ষিত করতে পেরেছি, প্রবাসে সেভাবে পারিনি। তাই প্রবাসে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর হার বেশি। সেটা খুবই দুঃখের।

অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার-নার্সদের রিজার্ভে রাখার পরামর্শ : ভিডিও কনফারেন্সে স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল বা শয্যার সংখ্যার বিষয়গুলো বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। কয়েকটা হাসপাতাল তো বিশেষভাবে চিহ্নিত করাই আছে এবং কিছু শয্যা চিহ্নিত করা আছে। সেগুলোতেও আরও প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। যাতে ভবিষ্যতে রোগীর সংখ্যা বাড়লে ভালোভাবে চিকিৎসা দিতে পারি। এ ক্ষেত্রে আমরা আরেকটা কাজ করতে পারি, আমাদের যারা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত নার্স বা ডাক্তার আছেন, তাদের ডেকে কিছু প্রশিক্ষণ দিয়ে রিজার্ভ রাখতে পারি। যে কোনো সময় যেন তাদের আমরা কাজে লাগাতে পারি। নার্সের সংখ্যা কিন্তু খুবই কম। ডাক্তারের চেয়ে নার্সের সংখ্যা কম। তিনি বলেন, যারা অবসরপ্রাপ্ত তাদের যদি ডাকা যায়, তাদের সেই ইনসেনটিভ আমরা অবশ্যই দেব। সেভাবে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। ঢাকা জেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে শিল্প পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকার আশপাশে বিশেষ করে গার্মেন্ট এবং অন্যান্য শিল্পাঞ্চল রয়েছে। কিছু শিল্প তো আমাদের চালু রাখতেই হচ্ছে। যেমন ওষুধ কারখানা বা গার্মেন্ট। আমরা যদি ইন্ডাস্ট্রি চালু না রাখি, এমনকি স্বাস্থ্য সুরক্ষা রাখার জন্য আমরা যে মাস্ক পরছি বা সুরক্ষা পোশাক তৈরি করছি- এগুলোও আমাদের প্রয়োজন হচ্ছে। সেই জায়গাটাতেই আমাদের শ্রমিকরা আসবে, সেটাকে কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া যায় এবং কীভাবে তাদের আনা-নেওয়া করা যায়, সেটা আমাদের বোধহয় বিশেষভাবে দেখা দরকার।

রমজানে তারাবিহ নামাজ ঘরে আদায় করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রমজানে তারাবিহ নামাজসহ যাবতীয় ইবাদত ঘরে বসে করতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরবেও মসজিদে জামাতে নামাজ বন্ধ করা হয়েছে। তারাবিহ নামাজও ঘরে বসে পড়তে বলা হয়েছে। এসব থেকে আমাদেরও শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেন, আল্লাহর ইবাদত তো যে কোনো জায়গায় বসে করতে পারেন। সামনেই রমজান মাস আসছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা মেনে তারাবিহ নামাজ ঘরে বসে পড়ুন। এতদিন সব নির্দেশনা মেনে চলেছেন বলেই আমরা এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।

ত্রাণে থাবা বসালে কঠোর ব্যবস্থা : মানুষের কষ্ট লাঘবে দেওয়া ত্রাণে কেউ থাবা বসালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের কষ্ট লাঘবে আমরা সাহায্য দিচ্ছি। এই সাহায্যে কেউ থাবা দিক তা আমরা চাই না। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম হলে সেটা আমরা কিন্তু কখনো বরদাস্ত করব না।

ষড়যন্ত্র করে একজন আরেকজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন : ষড়যন্ত্র করে একজন আরেকজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবস্থা নিতে গিয়ে কোথাও কোথাও আমরা দেখেছি যে কিছু কিছু জায়গায় আশপাশের লোক, তারাই ষড়যন্ত্র করে একজন আরেকজনকে ফাঁসিয়ে দেয়। তদন্ত করতে গেলে দেখা যায়, সেখানে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই দুর্যোগের সময় কেউ কারও পেছনে এভাবে লেগে থাকবেন, সেটাও কিন্তু আসলে ঠিক নয়। এসব থেকে বিরত থাকুন। সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। গোপালগঞ্জ জেলার সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গোপালগঞ্জ বা টুঙ্গিপাড়ায় এ রকম করোনা আক্রান্ত হবে, এটা সত্যিই আমি ভাবতে পারিনি। বাইরে থেকে বিশেষ করে বরিশাল থেকে যাতে লোকজন না যায়, সেটা একটু দেখতে হবে। মুন্সীগঞ্জের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, যারাই বাইরে থেকে আসবে, তাদেরই কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হবে। প্রয়োজনে জায়গা খুঁজুন। আর যারা যেখানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন, তারা তো থাকবেনই। 

এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যাবেন না : এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সংক্রমিত হন, দেখা যাচ্ছে বাইরে থেকে কেউ আসছে, তারপর সংক্রমিত হচ্ছে। যাদের মধ্যে এতটুকু সন্দেহ আছে বা কেউ কোথাও যেখানে ভাইরাসে আক্রান্ত, সেই এলাকা, সেই পরিবার থেকে অন্য কোথাও আপনারা যাবেন না। গেলে পরে আপনি অন্যকে সংক্রমিত করতে পারেন। সে জন্য সবাইকে যোগাযোগ, যাতায়াত বন্ধ রাখতে হবে। অনেক জায়গায় দেখেছি সব কিছু ভালো ছিল। সেখানে কেউ সংক্রমিত ছিল না। যেই নারায়ণগঞ্জ থেকে অথবা ঢাকা থেকে বা শিবচর থেকে বা মাদারীপুর বা শরীয়তপুর থেকে এ রকম কেউ চলে গেল বা ইতালি থেকে যারা এলো বা অন্য জায়গা থেকে এলো এবং গেল এরপর সেখানে প্রাদুর্ভাব দেখা গেল।

একটি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। আবার কাজ করতে হবে, না করলে তো হবে না। খুব বেশি জনসমাগম হবে না এমন কাজ করতে হবে। কৃষিকাজটা খোলা মাঠে হয়, সূর্যের তাপে বা বাতাসে ভাইরাসটি নষ্ট হয়। আবার ধান কেটে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। অনাবাদি জমি যেন না থাকে। এই গৃহবন্দী সময়ে টবে গাছ লাগান। বিভিন্ন জায়গায় হাটও বসতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে জনসমাগম যেন না হয়। দূরত্ব বজায় রেখে খোলা জায়গায় হাট বসুক। বারবার গরম পানি খান।  ফ্লাস্কে করে পানি রাখুন। একটু একটু করে খান। তাহলে এই ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত কম হবেন।

নারায়ণগঞ্জে দ্রুত পিসিআর ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ : ভিডিও কনফারেন্সে নারায়ণগঞ্জের সার্বিক করোনার চিত্র ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার (আরএমও) সামসুদ্দোহা সঞ্চয়। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানান, খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ ১৬ জন মেডিকেল কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার চিকিৎসারত ডাক্তারদের এন-৯৫ মাস্ক নেই। তারা ঝুঁকি নিয়েই চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। তাই আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এ ছাড়া করোনার জন্য বিশেষায়িত খানপুর হাসপাতালে করোনার পরীক্ষার জন্য কোনো পিসিআর ল্যাব নেই। তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতদিন তাহলে নারায়ণগঞ্জ পুরোপুরিভাবে ঢাকার ওপরই নির্ভর করে আসছে? এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কেন ল্যাব কিংবা রিসার্চ সেন্টার নেই জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 এত দিনেও কেন এটা করা হয়নি তা জানতে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন। সেখানকার কর্মকর্তাদের অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর