শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

খাটের নিচে তেলের খনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

খাটের নিচে তেলের খনি

রংপুরে খাটের নিচে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্যবসায়ী হানিফ মিয়ার মন্দ বরাত। সংকট বানিয়ে চড়া দরে ভোজ্যতেল বিক্রি করার আশায় তিনি খাটের নিচে আস্ত একটা ‘তেলের খনি’ আড়াল করে রেখেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তার মুনাফা শিকারের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেয় বুধবার রাতে। বাড়ির বক্স খাটের ভিতরে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল উদ্ধার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বুধবার রাত ১১টার দিকে নগরীর মধ্য পার্বতীপুর এলাকার হানিফ মিয়ার বাড়ি থেকে ১ হাজার ২৩৮ লিটার ভোজ্যতেল উদ্ধার করা হয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) উত্তম প্রসাদ পাঠক জানান, সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য পার্বতীপুর ঈদগামাঠ সংলগ্ন এলাকার একটি বাড়িতে অভিনব কায়দায় বক্স খাটের ভিতরে রাখা হয়েছিল টিসিবির ২ লিটার তেলের ২৫৯টি এবং ৫ লিটারের ১৪৪টি বোতল। উদ্ধার হওয়া মোট ১২৩৮ লিটার সয়াবিন তেলের অনুমানিক মূল্য ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। বাড়ির মালিক হানিফ মিয়াকে (৫৮) ও মালামাল সরবরাহকারী লাল মিয়াকে (৫২) আটক করা হয়েছে। টিসিবির ডিলারদের কাছ থেকে এসব তেল কম দামে কিনে এনে মজুদ করেছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নড়াইলে আটক ৫, জরিমানা ৭০ হাজার টাকা : নড়াইল প্রতিনিধি জানান, নড়াইলে টিসিবির সায়াবিন তেল অবৈধভাবে বেচাকেনার অপরাধে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে এ জরিমানা করা হয়। পুলিশ জানায়, টিসিবির তেল খুচরা পর্যায়ে বিক্রির খবর পেয়ে নড়াইল সদরের বাঁশগ্রাম এলাকা থেকে প্রথমে এক দোকানিকে এবং পরে আরও তিন দোকানিকে আটক করা হয়। চার দোকানির কাছ থেকে ৬৭ লিটার সায়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়। ধৃতদের নাম : হোগলাডাঙ্গার বাবু মিয়া, দৌলতপুরের উজ্জ্বল ভূঁইয়া, দারিয়াপুরের রাসেল এবং সম্ভুডাঙ্গার রফিকুল ইসলাম। শহরের রূপগঞ্জের টিসিবির ডিলার পরিতোষ কুন্ডু (৬৫) এই চার দোকানির কাছে অবৈধভাবে সয়াবিন তেল বিক্রি করেন। এ জন্য পরিতোষ কুন্ডুকে ৬০ হাজার টাকা এবং খুচরা পর্যায়ের চার দোকানিকে আড়াই হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বাগেরহাটে টিসিবির তেল উদ্ধার, জরিমানা ৩০ হাজার টাকা : বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান : বৃহস্পতিবার সকালে চিতলমারী বাজারের আবির স্টোর থেকে ৯০ লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়। টিসিবির এই তেল কালোবাজারে বিক্রির দায়ে আবির স্টোরের মালিক ইসমাইল কাজীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে এ ঘটনায় জড়িত চিতলমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মিলন মাঝি আটক না হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফুল আলম সাংবাদিকদের জানান, জাহাঙ্গীর ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান টিসিবির লাইসেন্স নিয়ে পণ্য বিক্রি করে আসছিল। যার প্রোপাইটার মো. জাহাঙ্গীর উকিল। গতকাল সকালে কালোবাজারে তেল বিক্রির খবর শুনে চিতলমারী বাজারের আবির স্টোরে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে কালোবাজারে বিক্রি হওয়া টিসিবির ১৯২ লিটার তেলের মধ্যে ৯০ লিটার তেল জব্দ করে। জাহাঙ্গীর ট্রেডার্সের মালিক মো. জাহাঙ্গীর উকিল জানান, তিনি গত বছর হজে যাওয়ার আগে টিসিবির ওই লাইসেন্সটি পরিচালনার জন্য চিতলমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মিলন মাঝিকে দিয়ে যান। সেই থেকে মিলন মাঝি টিসিবির পণ্য তুলে বিক্রিসহ লাইসেন্সটি ব্যবহার করছিল। আবির স্টোরের মালিক ইসমাইল কাজী ও দোকানের কর্মচারী আবদুল্লাহ কাজী জানান, তারা টিসিবির ১৯২ লিটার সয়াবিন তেল চিতলমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মিলন মাঝির কাছ থেকে কিনেছেন। ওই তেলের ১০২ লিটার তারা আগেই বিক্রি করে দেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর