শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচন করায় ত্রাণ চুরির এত সাহস

সৈয়দ আবুল মকসুদ

আকতারুজ্জামান

বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হওয়ার কারণেই ত্রাণ চুরির ঘটনা ঘটছে। দলীয় জনপ্রতিনিধি হওয়ার কারণেই তারা এ ধরনের চুরির সাহস পাচ্ছে। সরকার যদি এখনই ত্রাণ চোরদের দমন করতে না পারে তবে আরও সমস্যায় পড়তে হবে। এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে সরকার বরখাস্ত করেছে। কিন্তু বরখাস্ত খুব ছোট ধরনের শাস্তি। ত্রাণ চোরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার নির্দলীয় হলে অনেক ইউনিয়নে নিরপেক্ষ জনসেবক জনপ্রতিনিধি উঠে আসত। কিন্তু এটি না হওয়ায় তা সরকারের জন্য ক্ষতিকারক হয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় লোকদের বিনা ভোটে কোনো মতে নির্বাচিত করাই সরকারের ভুল হয়েছে। এর খেসারতই এখন সরকার দিচ্ছে। এখন থেকেই যদি ত্রাণে অনিয়ম দমন করা না যায় তবে সমস্যায় পড়তে হবে সরকারকে। কারণ ত্রাণ দিতে হবে আরও অন্তত কয়েক মাস।  আবুল মকসুদ বলেন, দেশে ত্রাণসামগ্রী চিরকালই চুরি হয়েছে। যখন যে সরকার থাকে চুরির সঙ্গে সে সরকারের লোকরাই জড়িত থাকে। বর্তমানে বিচিত্রভাবে ক্ষুধার্ত মানুষের চাল চুরি করছে তারা। এই জনপ্রতিধিদের মানুষের মধ্যে গণ্য করা যায় না। সরকার কয়েকজনকে বরখাস্ত করেছে। কিন্তু বরখাস্ত খুব ছোট ধরনের শাস্তি। এই অসভ্য লোকদের শাস্তি হওয়া দরকার দৃষ্টান্তমূলক। নইলে গরিব মানুষের ক্ষতির পাশাপাশি সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করবে তারা। এ গবেষক বলেন, ত্রাণ চোরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা আস্থা ও বিশ্বাসের সৃষ্টি হতো যে, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সরকারের অবস্থান যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সেটি প্রমাণ করার বড় সুযোগ ছিল এটি। সরকার সে সুযোগ হাতছাড়া করল। এর ফলে মানুষের মনে কষ্টের সৃষ্টি হলো। তিনি বলেন, গরিবের চাল চুরি বড় কথা নয়। বড় কথা হলো, আমাদের স্বভাবের মধ্যে মনুষ্যত্বের চরম অভাব তা সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে প্রমাণিত হলো। বিশ্বের মানুষ জানল যে, এমন দুর্যোগেও সরকারি দলের লোকেরা এমন দুর্নীতি করতে পারে! আবুল মকসুদ বলেন, ত্রাণ চুরি ধারাবাহিক চুরির একটি অংশ। এ সমাজে দুর্নীতিবাজরা বিপদে থাকে না, বিপদে থাকে সাধারণ মানুষ। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ কর্মকান্ডে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ত থাকার পক্ষে মত দেন তিনি। তিনি বলেন, সব জনপ্রতিনিধি তো চোর না। যারা চুরি করছে তাদের শাস্তি চাইছি। যেসব স্থানে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে সেসব স্থানে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত থাকা দরকার।

সর্বশেষ খবর