শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

অন্যায়ে লিপ্ত জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নকারীরাও

ড. ইফতেখারুজ্জামান

আরাফাত মুন্না

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপের মতো এই সংকটের সময়েও যেভাবে ত্রাণের চাল-ডাল চুরির খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে এই মহামারী দেশে দুর্নীতির মহোৎসবে রূপান্তরিত হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা এই সময়ে দুস্থদের ত্রাণ চুরি করছে, তারা নিজেকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দেওয়ার যোগ্যতা রাখে বলে মনে করি না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ত্রাণের চাল চোরদের নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা আমাদের উৎসাহ জোগালেও, এই ঘোষণা বাস্তবায়নকারীদের একাংশই এ অন্যায়ে লিপ্ত। ফলে এটা প্রধানমন্ত্রীর অবমাননা বলেও মনে করি। তিনি বলেন, এ ধরনের দুর্যোগের সময় সাধারণত মানুষের মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটবে। বিশেষ করে যারা সুবিধাবঞ্চিত তাদের পাশে দাঁড়াবে, এটাই প্রত্যাশিত। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি বা ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের কাছে এটা কাম্য। তার বিপরীতে যেটা চলছে, একদিকে এটা অগ্রহণযোগ্য, আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকেও এটা আইনের লঙ্ঘন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন, তারও লঙ্ঘন।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কিন্তু কোনো রকেট সায়েন্স লাগে না। সহজ হিসাব, যারা এই অন্যায় করছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেখা যাচ্ছে, একদিক থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন বা চুরি নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা যাদের রয়েছে, তাদের একাংশ কিছু ভালো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তির আওতায় এনেছেন, এমন ঘটনাও রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, যে পরিমাণ দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে, তার তুলনায় শাস্তি অনেক কম, ফলে চুরির ঘটনা বাড়ছে।

শাস্তি কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যারা শাস্তি নিশ্চিত করার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের একটি অংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত। ফলে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধীরা বিচারের ঊর্ধ্বে থেকে যাচ্ছেন। যারা এসব অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া গেলেই এমন দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন ইফতেখারুজ্জামান।

সর্বশেষ খবর