শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও পথে পথে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও পথে পথে মানুষ

প্রশাসনের বারবার সতর্কতার পরও ঘরে থাকছে না মানুষ। শুক্রবার ছুটির দিনেও রাজধানীর শনিরআখরায় ছিল লোকারণ্য -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর হারও। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় সংক্রমিত রোগী চিহ্নিত হচ্ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদফতর সারা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে লোকজনকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সরকারের সেই আহ্বানকে তোয়াক্কা না করে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ভিড় করছেন নানা শ্রেণির লোকজন। 

কয়েক দিন ধরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি। এখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা ছাড়াও অপ্রয়োজনে একশ্রেণির মানুষকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। 

প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ব্যাপক ভিড় দেখা যায় রাজধানীর কাওরানবাজারে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সারা দেশ থেকে রাতে যেসব কাঁচা পণ্য, সবজি ও প্রাণিজ খাবার আসে তার বড় অংশ কাওরানবাজারে নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। এখান থেকে খুচরা বিক্রেতারা কিনে নিয়ে মহল্লার কাঁচাবাজারে বা ভ্যানে করে বিক্রি করেন পথে পথে। এসব পণ্য কিনতে আবার ভিড় জমান ক্রেতারা। ফলে ক্রেতা, বিক্রেতা এবং পণ্য পরিবহনকারী মিলে প্রতিদিন সকালে ‘মানুষের হাট’ বসে কাওরানবাজারে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা থাকার পরও এ ধরনের ভিড়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ থেকে সবজি নিয়ে আসা এক ব্যক্তি জানান, চাহিদা কমে যাওয়ায় কৃষিপণ্য ও শাক-সবজি বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে খেতের ফসল খেতেই নষ্ট হচ্ছে। পেটের দায়ে নিরূপায় হয়ে এখন রাজধানীতে এসব পণ্য নিয়ে এসেছেন, যদি কিছু টাকা পাওয়া যায়। 

যাত্রাবাড়ী এবং মিরপুর ১ নম্বর কাঁচাবাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে। রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্যানে পণ্য বিক্রি করেন এমন এক খুচরা বিক্রেতা মিরপুর ১ নং কাঁচাবাজারে পণ্য কিনতে এসে জানান, ভাইরাসে সংক্রমণের ভয় থাকার পরও সংসার চালানোর দায়ে তিনি ভ্যানে করে পণ্য বিক্রি করেন। এখন পাইকারি দামে এসব পণ্য নিয়ে সারা দিন মহল্লায় বিক্রি করবেন। ক্রেতারা এ বিষয়ে সতর্ক হলে তাদের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায় বলে মন্তব্য করেন ভ্যানে সবজি বিক্রেতা এই ব্যক্তি। বলেন, ফ্ল্যাট থেকে হাঁক দিলে তারা অনেক সময় দোতলা, তিনতলায় গিয়ে পণ্য দিয়ে আসেন। কিন্তু এর পরও লোকজন নিচে এসে ভ্যানের সামনে ভিড় করে।

গতকাল সকালে রূপনগর আবাসিক এলাকার (৩০ নম্বর রোড সংলগ্ন) কাঁচাবাজারেও এমন ভিড় দেখা গেছে। ভ্যান বা দোকান থেকে যারা সবজি কিনছেন তাদের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব দেখা যায়নি। মুখে মাস্ক থাকলেও বেশির ভাগই গা ঘেঁষে খালি হাতে সবজি বা প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই আবার নিম্নআয়ের মানুষ। জিজ্ঞেস করলে সরল উত্তর : ‘ভাই সাধে কি আর বাজারে আসি, পেটে দানাপানি দিতে অইবো না... !’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর