শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে পুলিশের জন্য আবাসিক হোটেলের রুম বরাদ্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে পুলিশ সদস্যদের জন্য আবাসিক হোটেলে রুম বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। ব্যারাকে গাদাগাদি পরিবেশের কারণে তাদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে রাজধানীতে ডিউটি করতে গিয়ে পুলিশের অনেকেই বাড়িতে যেতে পারছেন না। এতে থানার ফাঁড়ি কিংবা পুলিশ ব্যারাকে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। ফলে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে নিজ নিজ থানার আশপাশের আবাসিক হোটেলগুলোতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর বেশ কয়েকটি থানা ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানান। ডিএমপি সূত্র জানায়, ৫০টি থানার পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসের এ সাধারণ ছুটির মধ্যেও নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। এদের অনেকেই ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে বাসায় ফেরেননি। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাসায় ফিরছেন না। আবার থানার ফাঁড়ি বা পুলিশ লাইনসেও থাকতে হচ্ছে গাদাগাদি করে। যেখানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার সুযোগ নেই। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম একটি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালনের পর সামাজিক দূরত্ব মেনে শোয়ার বা বিশ্রামের জায়গা পাচ্ছেন না, তারা থানার আশপাশের আবাসিক হোটেলগুলোতে রুম নিয়ে থাকতে পারবেন। যেসব হোটেলে ‘গেস্ট’ নেই, সেসব হোটেলের একেকটি রুম নিয়ে একেকজন থাকতে পারবেন। যারা একনাগাড়ে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের বিশ্রামে রেখে আরেকটি দলকে মাঠে নিরাপত্তা দিতে হবে। জানা গেছে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দুই সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি), আরেকজন কনস্টেবল। ওই টিমের বাকি সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর থেকে জানা গেছে, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও পুলিশের দায়িত্ব ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ ত্রাণ দিচ্ছে, কেউ লকডাউন মানাতে কাজ করছে, কেউ নিরাপত্তা বিধানে কাজ করছে, কেউ রোগীকে হাসপাতালে নিচ্ছে, আবার কেউ করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ সৎকারের কাজ করছে। এসব দায়িত্ব পালন শেষে থানায় বা ব্যারাকে থাকতে যাদের কষ্ট হচ্ছে, তাদের নিকটস্থ আবাসিক হোটেলে থাকতে বলা হয়েছে। আর যেখানে হোটেল নেই, সেখানে তাঁবু টাঙিয়ে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে থাকতে বলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পল্টন থানার অন্তর্ভুক্ত অন্তত ২০টি আবাসিক হোটেলের রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পুলিশ সদস্যদের থাকার জন্য। মতিঝিল থানা এলাকার প্রায় ২৫টি হোটেলের রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মতিঝিল থানা পুলিশের জন্য, বাকি ১৫টি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের সদস্যদের জন্য। ফার্মগেট এলাকার অন্তত ১০টি আবাসিক হোটেল পুলিশ সদস্যদের জন্য নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটিতে পিওএম সদস্যদের জন্য। একইভাবে বনানী, গুলশান, মিরপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, নীলক্ষেত ও এলিফ্যান্ট রোড এলাকার আবাসিক হোটেলে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর