যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আজ থেকে মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ শুরু হচ্ছে। এদিকে জার্মানিও গতকাল তাদের তৈরি ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) নতুন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে, যাতে ১৫ মিনিটে করোনা পরীক্ষা করা যাবে। সূত্র : বিবিসি, টিআরটি ওয়ার্ল্ড, এনডিটিভি। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক গত মঙ্গলবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যে আজ (বুধবার) মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। ভ্যাকসিনটির নাম, সিএইচএডিওএক্স-১ এনকোভ-১৯। করোনাভাইরাস মুক্তকরণে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদে তৈরি এটিই প্রথম ভ্যাকসিন যা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হচ্ছে। ম্যাট হ্যানকক ঘোষণা দেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথপ্রচেষ্টায় তৈরি সিএইচএডিওএক্স-১ এনকোভ-১৯ ভ্যাকসিন বৃহস্পতিবার মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে। তিনি জানান, এতে সুফল এলে ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ব্রিটিশ সরকার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের ২০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং ইমপেরিয়াল কলেজকে ২২.৫ মিলিয়ন পাউন্ড দেবে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ ভ্যাকসিন চূড়ান্তভাবে মানবদেহে প্রয়োগে সবাই আশাবাদী।
পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে জার্মানি : জার্মানির বায়োটেক সংস্থা বায়োএনটেক কর্তৃক উদ্ভাবিত কভিড-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন সরাসরি মানব শরীরে পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে জার্মানির ভ্যাকসিনেস রেগুলেটর। গতকাল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এমআইটি গবেষকদের উদ্ভাবন : করোনা পরীক্ষা করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন টাটার অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। মাত্র ১৫ মিনিটে করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে সক্ষম, এমন কিট উদ্ভাবন করেছেন ই২৫বায়ো নামের প্রতিষ্ঠানটির এ উদ্যোক্তারা। তাদের দাবি, তারা যে অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট তৈরি করেছেন, তা প্রচলিত অন্য পদ্ধতির চেয়ে অনেক কম সময়ে কেউ কভিড-১৯ সংক্রমণের শিকার হয়েছেন কি না, তা বলে দিতে পারবে। বর্তমান করোনা মহামারী অবস্থা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পেতে এ কিট সহায়ক হতে পারে।প্রাণীদেহে পরীক্ষা সফল : বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছিলেন, করোনার একমাত্র উত্তর তার ভ্যাকসিন। সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রাথমিক সাফল্য এলো। জানা গেছে, প্রাণীদের ওপর করোনা ভ্যাকসিনের যে পরীক্ষা করা হয়েছিল, তা সফল হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, গোটা বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রায় ৭০টি ভ্যাকসিনের ওপর কাজ চলছে। চীনা গবেষকরা এরই মধ্যে বাঁদর ও ইঁদুরের ওপর যে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা করেছিলেন, তা সফল হয়েছে। SARS-CoV-2-এর অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে ভ্যাকসিনটি। নরড়জিরা নামে এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য। দুটি ভিন্ন ডোজে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চলে। ৩ ও ৬ মাইক্রোগ্রাম ভ্যাকসিন ইঁদুর ও বাঁদরদের দেওয়া হয়। জানা গেছে, শুধু করোনা ভাইরাস নয়, কমপক্ষে আরও ১০ রকমের ভাইরাস নির্মূল করতে সক্ষম এই ভ্যাকসিন।