শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
মতবিনিময়কালে তোফায়েল

একটি দুস্থ পরিবারও অনাহারে থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় একটি দুস্থ পরিবারও অনাহারে থাকবে না। এ দেশের দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্যই আমাদের রাজনীতি।

গতকাল দুপুরে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে টেলিফোনে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। জেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে জেলার নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এতে অংশগ্রহণ করেন। আর রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে টেলিফোনে অংশ নেন তোফায়েল আহমেদ।

ভিডিও কনফারেন্সে তিনি স্থানীয় নেতাদের জানান, সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি আসন্ন রমজানে তাঁর নির্বাচনী এলাকার ১৩টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ন্যূনতম ৫০০ পরিবার ও পৌরসভায় ১ হাজার পরিবারসহ মোট ৮ হাজার পরিবারকে দুই দফায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করবেন। রমজানের প্রথম দিকে ও ১৫ রমজানের পর এ খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এর আগেও তোফায়েল আহমেদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্বাচনী এলাকার কয়েক হাজার গরিব, অসহায় পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারিভাবে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলার প্রতিটি মানুষের আশ্রয়, শিক্ষা, চিকিৎসা, খাদ্য ও বস্ত্র নিশ্চিত করতে কাজ করছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। কাজেই একটি দুস্থ অসহায় পরিবারও না খেয়ে থাকবে না। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ভাতের কষ্ট, কাপড়ের কষ্ট, মাথা গোঁজার ঠাঁই, শিক্ষা ও চিকিৎসার অভাব থাকার কথা ছিল না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধা, ভুখানাঙাদের কথা চিন্তা করেছিলেন। জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এটাই আমার জীবনের স্বপ্ন।’

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছেন। করোনার এই ক্রান্তিকাল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে দেশে যেন খাদ্য ঘাটতি না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ কোটি মানুষকে খাদ্যসহায়তার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ভোলা-১ আসনের এমপি তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৮ হাজার পরিবারকে আসন্ন রমজান মাসে দুই দফা খাদ্যসহায়তা দেব। এজন্য সঠিক দুস্থদের তালিকা করুন। ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। ভোলায় একজনও অনাহারে থাকবে না। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া ভোলার অসহায়-দুস্থ পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। আমি নিজে দিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজম মুকুল এবং ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন সর্বক্ষণ মাঠে থেকে নিজস্ব অর্থায়নে প্রচুর খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। অন্যদিকে সরকারিভাবে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেও ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। দ্বীপজেলা খ্যাত ভোলা এখনো করোনামুক্ত থাকায় শুকরিয়া জানিয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, সবার সচেতনতায় আমাদের জেলা এখনো করোনামুক্ত। এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। তবে সবাইকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

জেলা পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নকিব, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম গোলদারসহ ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা। জেলার স্থানীয় নেতারা ভোলা-১ আসনের এমপিকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় এলাকার দুস্থ অসহায় মানুষের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই হস্তান্তর করা হবে।

সর্বশেষ খবর