শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
উদ্বেগজনক তথ্য

নিউইয়র্কে হাসপাতালে থাকা ৯০ ভাগ রোগীই মারা গেছেন

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (জামা) গবেষণা জরিপে নিউইয়র্কের প্রধান প্রধান হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীদের গণহারে মৃত্যুর অবিশ্বাস্য তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। ১ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিলের মধ্যে নিউইয়র্কের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা সিস্টেমের আওতায় নর্থওয়েল হেলথ হাসপাতালের বিভিন্ন শাখায় যারাই ভর্তি হয়েছেন তার ৯০ ভাগই মারা গেছেন। এ সময়ে যারা ভেন্টিলেটরে ছিলেন তাদের মধ্যে ৬৫ বছরের অধিক  বয়েসী ছিলেন ৯৭.২ ভাগ এবং ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে ছিলেন ৭৬,৪ ভাগ। এ গবেষণা চালায় নর্থওয়েল হেলথ কভিড-১৯ রিসার্চ কনসোর্টিয়াম এবং ফিইনস্টাইন ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল রিসার্চ যৌথভাবে। এতে দেখা গেছে, ওই সময়ের মধ্যে হাসপাতালের ১২টি শাখায় মোট ৫৭০০ রোগী ভর্তি হন। নিউইয়র্ক সিটি এবং পার্শ্ববর্তী লং আইল্যান্ড-ওয়েস্টচেস্টার এলাকায় করোনা মহামারী আকার ধারণ করায় এসব রোগীকে সারিয়ে ওঠাতে চিকিৎসকরা সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। গবেষণায় নেতৃত্ব প্রদানকারী ফিইনস্টাইন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অধ্যাপক কারিনা ডব্লিউ ডেভিডসন বলেন, ‘চিকিৎসকরা নিজ অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী সেরে ওঠেননি রোগীরা।’ উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটি এবং লং আইলান্ড এবং ওয়েস্টচেস্টার এলাকার এক কোটি ১০ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার জন্য খ্যাতি অর্জনকারী এ হাসপাতালে করোনার প্রাদুর্ভাবের পরই সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছিলেন বলে ওই গবেষণায় জানা যায়। ফিইনস্টাইন ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ডা. কেভিন জে ট্র্যাসি বলেন, ‘অজানা-অদৃশ্য ভাইরাসের আক্রমণে নির্বিচারে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনাবলির নেপথ্যের কাহিনি উদঘাটনের জন্য এ গবেষণা চালানো হয়। এর মধ্যদিয়ে পরবর্তী রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা অন্য হাসপাতালেও অনুসরণ করা হবে।’ মারা যাওয়া রোগীর অধিকাংশই পুরুষ এবং বয়স ছিল ৬৩ বছরের অধিক। এসব রোগীর মধ্যে ১৭৩৪ জনের জ্বর ছিল, ৯৮৬ জনের শ্বাসকষ্ট হয় এবং ১৫৮৪ জনকে অক্সিজেন প্রদান করা হয়েছিল। ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়া হয় চার দিন পর। এ ধরনের ২৬৩৪ রোগী, যাদের হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয় অথবা চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই মারা গেছেন। তাদের ১৪.২ ভাগ ছিলেন আইসিইউতে, ১২.২ ভাগ ছিলেন ইনভেসিব মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনে, ৩.২ ভাগ ছিলেন কিডনি-প্রতিস্থাপনের থেরাপিতে।  ৮৮ ভাগ মারা যান ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়ার পর। এ জরিপ চলা পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে ছিলেন ৩০৬৬ রোগী। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, গবেষণা চলাকালেই হাসপাতাল থেকে রিলিজের কদিন পর আবারও অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন মুমূর্ষু অবস্থায়।

সর্বশেষ খবর