সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

কালো টাকা সাদা ও জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা (কভিড-১৯) সংকটে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে দেশেও তেলের দাম কমানোর সুপারিশ করেছে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)। প্রতিষ্ঠানটি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার সুপারিশও করেছে। 

গতকাল সংস্থাটি গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সুপারিশ করে। সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান জানান, ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সংস্থাটির নেটিজন ফোরামের চতুর্থ পর্বের আলোচনায় এসব সুপারিশ উঠে আসে। স্কাইপিতে পরিচালিত এই আলোচনায় আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়েমা হক বিদিশা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক ও সানেমের গবেষণা ফেলো মাহতাব উদ্দিন।

ফোরামে যেসব সুপারিশ উঠে আসে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : (১) বিশ্ববাজারে ক্রমহ্রাসমান তেলের দামের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার  দেশীয় বাজারেও তেলের দাম একইভাবে কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে, এতে করে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যম আয়ের জনগণ কিছুটা সুবিধা পাবে; (২) কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থায়নের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে যে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বারবার দেওয়ার ফলে কালো টাকা অর্থাৎ অবৈধ সম্পদ বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে এনবিআরকে (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) আরও  জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে; (৩) স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য খাতভিত্তিক এবং অঞ্চলভিত্তিক নির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়ন করা; (৪) শতকরা ৫ শতাংশ সুদে ঋণের বদলে কৃষকদের জন্য বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা; (৫)  কৃষকদের কাছ থেকে সরকারে শস্য কেনার পরিমাণ বৃদ্ধি করা; (৬)  কৃষিতে যন্ত্রায়ন করা; এবং (৭) অর্থনীতিতে নিয়োজিত সেবাদানকারীদের সাহায্যের জন্য নীতি প্রণয়কদের এগিয়ে আসা।

ড. সেলিম রায়হান বলেন, চলমান মহামারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি হিসাব করার জন্য সানেম কাজ করছে এবং এটি ক্রমাগত স্পষ্ট হচ্ছে যে, দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গত কয়েক দশকের অর্জন এই মহামারীর ফলে ম্লান হয়ে যেতে পারে। ড. রায়হান বলেন, টাকা ছাপানোর ফলে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টির সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে, অর্থায়নের জন্য আর কোনো বিকল্প না থাকলে এই উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে। স্বাস্থ্য খাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ড. রায়হান বলেন, বাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাগুলোতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হলেও বাংলাদেশের নীতিপ্রণেতারা  সেটি করেন না। সানেমের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য খাতের জন্য জিডিপির চার শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়।

সর্বশেষ খবর