শুক্রবার, ১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

র‌্যাপিড টেস্ট কিট নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই দেশীয় প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখার অনুমতি দিয়েছে সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কিট পরীক্ষার অনুমতি পেয়েছে। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআরবি) ওই র‌্যাপিড কিট পরীক্ষা করাতে পারবে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইতিমধ্যে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএসএমএমইউর উপাচার্য এবং আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। গণস্বাস্থ্যকে আর নিয়ম অনুযায়ী কন্ট্র্যাক্ট রিসার্চ ফার্মের (সিআরও) দ্বারস্থ হতে হচ্ছে না। এ জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা চাই জাতীয় প্রতিষ্ঠানে কিটটি পরীক্ষা করা হোক। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যাব। আগামী রবি বা সোমবার বিএসএমএমইউতে এক হাজার কিট পরীক্ষার জন্য হস্তান্তর করা হবে। অনুমতি দেওয়ায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে ধন্যবাদও জানাচ্ছি।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন গবেষণা  প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) গণস্বাস্থ্যের কাছে কিট চেয়েছে। রবিবার সিডিসিকে ৮০০ কিট দেবে গণস্বাস্থ্য। কিটের ব্যাপারে মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও গণস্বাস্থ্যের যোগাযোগ হয়েছে বলে তিনি জানান। গত শনিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা শনাক্তকরণ কিট সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে চেয়েছিল। তবে ওই অনুষ্ঠানে সরকারের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। পরে অনুমোদনের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে নিয়ম অনুযায়ী কন্ট্র্যাক্ট রিসার্চ ফার্মের (সিআরও) সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। এতেই বেঁকে বসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনও করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অবশ্য কিটের উৎপাদন প্রক্রিয়া সঠিক ছিল কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারে (বিএমআরসি) দিয়ে এসেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, তৃতীয় কোনো পক্ষের মাধ্যমে ওই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। বিএসএমএমইউ অথবা আইসিডিডিআরবিতে সেই পরীক্ষা করাতে গণস্বাস্থ্য রাজি হয়েছে। কার্যকারিতা পরীক্ষাটি দুই জায়গাতেই হতে পারে। তবে যে কোনো একটি সংস্থার তত্ত্বাবধানে তা হতে হবে। সেখানে কার্যকারিতা পরীক্ষা হবে। সেই ট্রায়ালের রিপোর্ট বিএসএমএমইউ বা আইসিডিডিআরবি আমাদের কাছে জমা দেবে। ট্রায়ালে উত্তীর্ণ হলে পরে আমরা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় যাব। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট গবেষণা দলের সমন্বয়কারী ড. মহিব উল্লাহ খোন্দকার বলেন, গত ২২ এপ্রিল থেকে আমাদের সঙ্গে ঔষধ প্রশাসনের একটু টানাপড়েন হয়েছে। আমরা যে কিটটা উদ্ভাবন করেছি, সেটার ইন্টারনাল ভেলিডেশন আমরা আমাদের ল্যাবে করেছি। নিয়ম অনুযায়ী তৃতীয় একটি গবেষণাগারে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা বা এক্সটারনাল ভেলিডেশন করাতে হয়। এটি নিয়ম। যার জন্য আমরা এতদিন ধরে ঔষধ প্রশাসনকে বলে আসছিলাম। তারা দেরিতে হলেও আমাদের সেই অনুমতি দিয়েছেন। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও আমাদের কিটের সক্ষমতা পরীক্ষা করতে বেশ আগ্রহী। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা আলোচনার ভিত্তিতে দুই পক্ষ মিলে কাজ চালিয়ে যাব।

সর্বশেষ খবর