সোমবার, ৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
আশার আলো ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে

ভারত চীনের চেয়ে নিরাপদ বাংলাদেশের অর্থনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারী কভিড-১৯-এর দাপটে যেখানে বিপর্যস্ত ইউরোপ-আমেরিকার সব দেশ সেখানে বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ শক্ত। চীন ও ভারতকে পেছনে ফেলে ৬৬ দেশের তালিতায় নবম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। এমনকি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে খ্যাত ভিয়েতনামকেও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে, করোনাভাইরাস সংকটে সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে থাকা ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে নবম স্থানে। এতে বিশ্বের মোট ৬৬টি দেশের এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার  দেশগুলোর মধ্যে কেবল বাংলাদেশের নামই তুলনামূলক নিরাপদে থাকা দেশের তালিকার শীর্ষ ১০-এ এসেছে। চীন থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারী যে বড় ধরনের অর্থনৈতিক দুর্যোগ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে কারও সন্দেহ নেই।

ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা বন্ধ থাকায় তিন দশকের মধ্যে এবারই প্রথম বছরের শুরুর তিন মাসে অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার তথ্য দিয়েছে চীন সরকার। ইউরোপ ও আমেরিকায় মহামারীর প্রকোপ শুরু হয়েছে কিছুদিন পরে। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের অনেক দেশেই এখনো লকডাউন ওঠেনি। তাদের ক্ষতির তথ্যও সুনির্দিষ্টভাবে আসতে শুরু করেনি। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাসহ শতাধিক দেশ ইতিমধ্যে আইএমএফ-এর সহায়তা চেয়েছে। মিসরের মতো কোনো কোনো দেশ আগের ঋণ শুধতে না পেরে বেইল আউট চেয়েছে।

ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সের বরাত দিয়ে ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর বন্ড ও শেয়ারবাজার থেকে গত চার মাসে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি তুলে নিয়েছে। তুলে নেওয়া অর্থের এই অঙ্ক ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার সময়ের তিনগুণ।

ইকোনমিস্ট বলছে, কভিড-১৯ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে অন্তত তিনভাবে। লকডাউনের কারণে মানুষ ঘরে থাকতে বাধ্য হওয়ায় উৎপাদনও বন্ধ থাকছে। বিশ্বজুড়ে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় রপ্তানি আয় কমে যাচ্ছে। আর বিশ্বের বড় একটি অংশ বেকায়দায় থাকায় বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহেও টান পড়ছে। এই মহামারী যদি জুলাইয়ের আগেও থিতিয়ে আসে, তারপরও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জিডিপি এবার আইএমএফের গত অক্টোবরের পূর্বাভাস থেকে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ কম হবে বলে মনে করছে ইকোনমিস্ট।

সংকট মোকাবিলা করতে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর অন্তত আড়াই ট্রিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হতে পারে বলে ইকোনমিস্টের ধারণা। আর এই টাকা তাদের সংগ্রহ করতে হবে বিদেশ থেকে, অথবা নিজেদের রিজার্ভ ভেঙে চলতে হবে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব প্রায় স্তব্ধ। বন্ধ সব কলকারখানা। আয়-উপার্জন নেই। এমনকি আভাস মিলছে বিশ্ব অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে যেতে বসেছে। সেই পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলক নিরাপদ অবস্থানে আছে। এমন প্রতিবেদনের পক্ষেই মত দিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরাও। খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদদের গবেষণায় উঠে আসা এই তালিকায় ভারতের অবস্থান ১৮। পাকিস্তানের ৪৩। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১৭।

সর্বশেষ খবর