সোমবার, ৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

ছয়টি ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদ

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করতে গত পাঁচ মাসে সারা বিশ্বে প্রায় ৯০টি ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। এসব ভ্যাকসিনের মধ্যে অন্তত ছয়টি ভ্যাকসিন পরীক্ষায় মানবদেহের জন্য কার্যকর বলেও খবর পাওয়া গেছে। এখন এসব নিয়ে আরও নানামুখী বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। নেচার ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি ভ্যাকসিন বা প্লেসেবো তৈরিতে কয়েক হাজার মানুষ নানাভাবে জড়িত থাকেন। এই প্রক্রিয়া কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বিজ্ঞানীরা একের পর পরীক্ষা করতে থাকেন এই ভ্যাকসিনের প্রভাব। তবে এই মহামারী সময়ে বিজ্ঞানীরা দ্রুততার সঙ্গে এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাইরাসের বিরুদ্ধে কেবল ভ্যাকসিনই মানুষের শরীরে ইমিউনিটি বাড়িয়ে ভাইরাসকে প্রতিহত করতে পারে। তবে সব ছাপিয়ে মূল যে প্রশ্ন এখন দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে কোন ভ্যাকসিনটি প্রথম পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা হবে এবং কীভাবে ওই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা তুলনা ও পরিমাপ করা হবে?

নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ইমিউনাইজেশনে অর্থায়ন করা সংস্থা দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গাভির প্রধান নির্বাহী সেথ বার্কলে বলেন, কার্যকারিতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ২০০ ভ্যাকসিন  নেওয়ার উপায় নেই। ডব্লিউএইচওর প্রস্তাব হলো সবাই মিলে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের মূল কার্যকারিতা যাচাই করা হবে। ধাপে ধাপে নিয়মিতভাবে ভ্যাকসিনের যাচাই করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের আগে তাদের ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য তালিকাভুক্ত হতে হবে। যেসব ভ্যাকসিন কাজ করছে না বলে মনে হবে, সেসব ভ্যাকসিন সেখানেই বাতিল করে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে প্যারিসে ফ্রান্স ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড  মেডিকেল রিসার্চের রিসার্চ ডিরেক্টর মারি-পল কিইনি বলেন, এ  ক্ষেত্রে সবার আগে কীভাবে একটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরিমাপ করা হবে, তার বিশদ বিবরণ ও পরিকল্পনা করার দরকার রয়েছে ডব্লিউএইচওর। সামগ্রিক পদ্ধতির পরিকল্পনা করতে হবে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কিসের ভিত্তিতে কোন ভ্যাকসিনটি সবার আগে পরীক্ষা করা হবে, তা নির্বাচন করা।

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন মানুষের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর কিনা, তা ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার কথা বলছেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। তবে কিছু কিছু ডেভেলপার বিকল্প উপায়েও তাদের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা যাচাই করে দেখছেন। জানা গেছে, শুরুতে ভ্যাকসিন কয়েকশ মানুষের শরীরে দিয়ে এর কার্যকারিতা যাচাই করে দেখা হয়। এতে পজিটিভ ফল পাওয়া গেলে ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা  রোগীদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ভাইরাসে সংক্রমিত স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর জরুরি ভিত্তিতে তা প্রয়োগের অনুমতি নিতে হয়। ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতো ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা তা জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগের অনুমতি দিতে পারে। চীনের তিয়ানজিনে কানসিনো বায়োলজিকস কোম্পানির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের কোম্পানি এ ধরনের একটি ভ্যাকসিন  তৈরি করেছে। জরুরি প্রয়োজনে তা প্রয়োগ করা যাবে। আবার জনসন অ্যান্ড জনসন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০২১ সালের শুরুর দিকে তাদের তৈরি ভ্যাকসিন জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগ করার সক্ষমতা অর্জন করবে। তবে ডব্লিউএইচওর ইমিউনাইজেশনস, ভ্যাকসিনস অ্যান্ড বায়োলজিক্যালস ডিপার্টমেন্টের প্রধান ক্যাথেরিন ওব্রিয়েন বলেন, যদি কোনো ভ্যাকসিন সঠিক পথে তৈরি হয়ে থাকে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিশ্চিত করে যে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ, তাহলেই কেবল তা প্রয়োগ করা হবে। কারণ নিরাপত্তার সঙ্গে কোনো ধরনের আপস করার সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর