চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির বলেছেন, ‘নিজের দায়বদ্ধতা তো বটেই, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তির বিষয়টি মাথায় রেখেই স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। একদিকে দলের দায়িত্ব, অন্যদিকে মেয়র : এই দুই ক্ষেত্রেই সাধ্যের সর্বোচ্চটুকু করার চেষ্টা করেছি। ষড়যন্ত্র ছিল, তা স্বচ্ছতা আন্তরিকতা ও সার্বজনীনতা দিয়ে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র নাছির আরও বলেন, ‘রাত-দিন পরিশ্রম করেছি, সময় দিয়েছি। ছুটির দিনেও কাজ করেছি। নিজের বেতন-ভাতা নিইনি। অনিয়মের ভাগাড়ে পরিণত হওয়া নগরে নিয়ম মানা, নীতিমালার আওতায় কাজ করার প্রক্রিয়ায় আনতে সক্ষম হয়েছি। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আদর্শ পরিবার সৃষ্টিতে চেষ্টা করেছি। টিমওয়ার্ক হয়েছে। ভাবনারও সীমা ছাড়িয়ে পরিকল্পিত উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। বরং নিয়ম মানতে গিয়ে ক্ষেত্রবিশেষে সমালোচিত হয়েছি।’
চসিক নির্বাচনের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও আগামী ৪ আগস্ট পর্যন্ত মেয়াদকাল রয়েছে মেয়র নাছিরের। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল নির্বাচন হলেও তিনি দায়িত্ব নেন সে বছরের ২৬ জুলাই। দায়িত্ব পালনের প্রায় শেষলগ্নে আসা মেয়র নাছিরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সংক্রান্ত নানা তথ্য উঠে এসেছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে কথামালায়।
তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেছি। মন্ত্রণালয়ের লিখিত নির্দেশনা ও আইনের বিধান মেনে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করেছি। আগে অনেকটা ‘চেইন অব কমান্ড’ এর বাইরে চলে যাওয়া এই প্রতিষ্ঠানকে ‘নরম-গরমে’ আইন মেনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় রেখেছি। ব্যক্তিগতভাবে সমালোচনার মুখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কিন্তু দমে যাইনি।’মেয়র নাছির জানান, ‘১৯৯০ থেকে ২৫ বছরে ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। আর আমার গত এক মেয়াদে ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছি। এরই মধ্যে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় কাজের পরিধি ও বহুমাত্রিকতা বেড়েছে।’
মেয়র বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাংলাদেশে প্রথম অনলাইনে টেন্ডার প্রক্রিয়া চালু করেছি। মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ময়লা অপসারণ করার পদ্ধতি দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানেই চালু ছিল না। আমরা এই ‘ডোর টু ডোর’ প্রকল্পের আবর্জনা সংগ্রহ ও তা অপসারণ পদ্ধতি চালু করি। এজন্য ৯ লাখ বিন ঘরে ঘরে দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ২ হাজার জনবল যুক্ত করা হয়, যা চসিকের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
মেয়াদকালের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির বলেন, চট্টগ্রামকে আধুনিক পরিকল্পিত নগর প্রতিষ্ঠায় যতসম্ভব প্রকল্প সবই গ্রহণ করা হয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শহরে পরিকল্পিত বাস টার্মিনাল নির্মাণ, স্লটার হাউস নির্মাণ, আলোকায়ন, পরিচ্ছন্নতা, নিষ্কাশন, সড়ক সম্প্রসারণ-উন্নয়ন সংস্থার, মশক নিধন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণসহ সব ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার নিরসনে প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মেগা প্রকল্পের আওতায় কাজ শুরু হয়’ বলেও জানান মেয়র।