নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনকে প্রতিপক্ষ বজলু বাহিনীর লোকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বেলা ১টায় উপজেলার পূর্বগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে আনোয়ার বাহিনীর লোকজন বেলা দেড়টায় পূর্বগ্রামের বজলু বাহিনীর সদস্য সানাউল্লাহর বাড়িসহ নিরীহ আরও শতাধিক মানুষের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর চালায় এবং লুটপাট করে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় বজলু বাহিনীর সদস্য অলিউল্লাহকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহত যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের মৃত বাদশা মাঝির ছেলে।
জানা যায়, চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে একই এলাকার অপর সন্ত্রাসী বজলুর রহমান বজলুর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে আনোয়ারের সঙ্গে বজলু বাহিনীর সদস্য সানাউল্লাহর কথাকাটাকাটি হয়। পরে আনোয়ারের লোকজন সানাউল্লাহর ভাই সালাউদ্দিনকে মারধর করে। এ ঘটনার জেরেই গতকাল বেলা ১২টার দিকে বজলু বাহিনীর সদস্য সানাউল্লাহ ও তার অপর ভাই অলিউল্লাহর সঙ্গে আনোয়ারের বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে বেলা ১টার দিকে অলিউল্লাহ ছুরি নিয়ে বাসায় ঢুকে আনোয়ারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে পরিবারের লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় আনোয়ারকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বজলু ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক ব্যবসা, বিচার-শালিসে অর্থ আদায়, পানির সিন্ডিকেটসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। কয়েকটি মামলাও রয়েছে বজলু ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। এদিকে যুবলীগ নেতা আনোয়ারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আনোয়ারের লোকজন বজলু বাহিনীর সদস্য সানাউল্লাহর বাড়িসহ আর শতাধিক নিরীহ লোকজনের বাড়ি-ঘরে হামলা ও লুটপাট চালায়। এ সময় হামলাকারীরা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, টিভি, ফ্রিজসহ কোটি কোটি টাকার মালামাল লুটে নেয়। বাধা দিতে গিয়ে পূর্বগ্রামের জহিরুল, সহিদ, আমজাত, আলামিন, হানিফ, চান মিয়া, শাহিনসহ প্রায় ৫০ জন নারী-পুরুষ আহত হন। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রবেশমুখে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যাতে আর কোনো ঘটনা ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
