শুক্রবার, ৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজধানীর সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির জট, মানুষের ঢল

পাড়া-মহল্লায় খুলছে দোকানপাট, স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির জট, মানুষের ঢল

রাজধানীর বনানীতে গতকাল ব্যক্তিগত গাড়ির জট লেগে যায় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে যানবাহন ও মানুষের চলাচলও বাড়ছে। ঢাকার সড়ক-মহাসড়কে শুধু গণপরিবহন ছাড়া স্বাভাবিক দিনের মতোই সব ধরনের গাড়ি চলছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিন দিন বাড়ছে সাধারণ মানুষের ঢাকায় প্রবেশ এবং বের হওয়া। গণপরিবহন না থাকায় সিএনজি, ব্যক্তিগত গাড়ি এবং চুক্তিভিত্তিক ব্যক্তিগত পরিবহন ব্যবহার করছেন অনেকে। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লায়ও খুলছে দোকানপাট। কেউ কোথাও কোনো স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার পয়েন্টে দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চলাচল বাড়তে থাকে। প্রচুর গাড়ি থাকায় যানজটও তৈরি হয়। সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক, রিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মিনিট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহনই চলতে দেখা গেছে। কারওয়ান বাজার পয়েন্টে যাত্রী পরিবহনের জন্য অনেক মোটরসাইকেলও দেখা গেছে। এ ছাড়া বিজয় সরণি সিগন্যালেও যানজট দেখা গেছে। প্রতিটি গাড়ি ৫-৭ মিনিট সিগন্যালে অপেক্ষা করতে হয়েছে। তবে এসব সড়কে চলাচলে পুলিশকে তল্লাশি করতে দেখা যায়নি। অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলেছে যানবাহনগুলো। রাজধানীর সাইনবোর্ড এলাকায় দেখা যায়, ঢাকামুখী সড়কে পুরো যানজট লেগে ছিল। ধীরগতিতে চলেছে এসব যানবাহন। দূরপাল্লার বাস ও গণপরিবহন ছাড়া মহাসড়কে ইজিবাইকসহ সবই চলেছ। শারীরিক দূরত্বের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। গাদাগাদি করে মানুষ যাচ্ছে গন্তব্যে। এখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সড়কে গাড়ির চাপ বাড়ছে। মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসছে। অনেক কিছু শিথিল হওয়ায় পুলিশও তল্লাশি শিথিল করেছে। সিএনজি অটোরিকশাচালক জাকারিয়া মিয়া বলেন, ‘বেঁচে থাকার তাগিদেই বের হয়েছি। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও কিছু করার নেই। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে তো থাকতে পারব না।’ এদিকে বিমানবন্দর সড়কেও ছিল গাড়ির চাপ। গতকাল সকালে বনানী সিগন্যালে যানজট দেখা গেছে। আবদুল্লাহপুর দিয়ে ঢাকায় প্রবেশে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এসব গাড়ি সামাল দিতে পুলিশকেও হিমশিম খেতে হয়েছে।  

পাড়া-মহল্লায় খুলছে দোকানপাট : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আরোপ করা বিধি-নিষেধ ধীরে ধীরে শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর পরই রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সীমিত পরিসরে শপিং মলসহ দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ১০ মে থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের কথা থাকলেও এরই মধ্যে নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দোকান মালিকরা দোকানপাট খোলা শুরু করেছেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিসরে দোকানপাট খোলা রাখছেন তারা। গতকাল বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। রাজধানীর খিলগাঁও, মৌচাক, মগবাজার, নিউমার্কেট, দৈনিক বাংলা, শাহবাগ, মিটফোর্ড, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, রামপুরা, বাড্ডা, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে স্টেশনারি, হার্ডওয়্যার, কাপড়ের দোকান, ইলেকট্রনিকসের দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে বেচা-বিক্রি চলছে। এসব দোকানপাটে স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা নেই। তিন ফিট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও কোনো দোকানি তা মানছে না। যার কারণে ক্রমেই ঝুঁকি বাড়ছে। তবে অধিকাংশ দোকানদারের দাবি, তারা পেটের দায়েই দোকান খুলেছেন। অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই তাদের এমন সিদ্ধান্ত। খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় দেখা গেছে বেশিরভাগ দোকানই খোলা। কেউ দোকানের অর্ধেক খুলে রেখেছেন কেউ পুরোপুরি খুলেছেন। একই চিত্র দেখা গেছে মিটফোর্ড এলাকায়। সেখানকার অধিকাংশ দোকানই খোলা। কেউ কেউ দোকানের শার্টার অর্ধেক নামিয়ে রেখেছেন। কেউ কেউ পুরোপুরি খুলে দিয়েছেন। পুরান ঢাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে দেখা গেছে বেশিরভাগ দোকানই ধীরে ধীরে খুলছে। রাস্তাঘাটেও ভিড় রয়েছে।

সর্বশেষ খবর