বুধবার, ১৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখতে হবে

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ

দেশের প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ধাক্কায় অর্থনীতিতে যে ধস নেমেছে, তা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কর্মকা  চালু রাখতে হবে। মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবন-জীবিকা সচল রাখতে হবে। তিনি বলেন, অনেক মানুষ দরিদ্র ও নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। অনেক মানুষ লকডাউন মানছেন না। মানুষের ঘরে খাবার নেই। তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। আজও (গতকাল) প্রায় এক হাজার মানুষ আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ। আগের দিন এক হাজারের বেশি আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছি। আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, চলতি মে মাস এমন খারাপ পরিস্থিতিই যাবে।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক এ সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন চালু করা দরকার। কারণ, দীর্ঘদিন বন্ধের ফলে সারা দেশের অনেক মানুষ দরিদ্র ও নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। আবার দেশের মানুষ লকডাউনও মানছেন না। কিন্তু প্রত্যেক মানুষকে নিজের ও অন্যের জীবন বাঁচাতে হবে। সারা দেশে বেশি বেশি করে করোনা টেস্ট করাতে সরকারের উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা ইতিমধ্যে অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। মানুষের ঘরে খাবার নেই। তাই যেসব মানুষের ঘরে খাবার নেই, তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। একই সঙ্গে সব ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে অর্থনৈতিক কর্মকা  সচল রাখতে হবে। ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের এ চেয়ারম্যান বলেন, বিগত আট থেকে ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি গড়ে ৬ থেকে ৮ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। কিন্তু এবার করোনাভাইরাস অর্থনীতিতে যে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে, তাতে প্রবৃদ্ধি অনেক কমে যাবে। সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবন-জীবিকা সচল রাখতে হবে। ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, চলমান সংকট উত্তরণে সরকার সঠিক সময়ে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এ প্রণোদনা প্যাকেজ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার। বড় এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা প্রণোদনার অর্থ পেলেও সারা দেশের প্রায় এক কোটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পাবেন না। কারণ, তাদের ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন নেই। এমন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশে আর্থিক সহায়তা নিয়ে কাজ করতে পারে পিকেএসএফ এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলো। পিকেএসএফের কঠোর নজরদারিতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হাতে প্রণোদনা পৌঁছানোর কাজে স্বচ্ছতা আসবে। পিকেএসএফের এ চেয়ারম্যান বলেন, কৃষি ও খাদ্য এবং পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সচল রাখতে হবে। এর সঙ্গে মানুষের আয় হলে, হাতে টাকা থাকলে, তারা খাবার কিনে খেতে পারবেন। এবার আমাদের ফসলের ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি, খাদ্য সংকট হবে না। সরকারও কৃষি পণ্য কেনার ঘোষণা দিয়েছে ভালো দামে। খ্যাতনামা এ অর্থনীতিবিদ আসছে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের অগ্রাধিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তার পরেই কৃষি ও অকৃষি খাতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এত দিন এসব খাত কম গুরুত্ব পেয়েছে। এর সঙ্গে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতও নজরদিতে আনতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

 

সর্বশেষ খবর