বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যু

মারা গেলেন আরও এক চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যু

এক দিনেই  রেকর্ড ১৯ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬৯ জন। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭৯০০টি নমুনা পরীক্ষা করে আরও ১ হাজার ১৬২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭ হাজার ৮২২ জন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর খোঁজ মেলার পর গত দুই মাসে আর কখনো এক দিনে এত নতুন রোগী শনাক্ত হয়নি। এত  বেশি মৃত্যুও বাংলাদেশকে দেখতে হয়নি। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত এক দিনে যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ৭ জন নারী। ১৩ জন ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা ছিলেন। একজন নারায়ণগঞ্জের, একজন মুন্সীগঞ্জের, একজন নড়াইলের, দুজন চট্টগ্রামের এবং একজন কুমিল্লার। অধ্যাপক নাসিমা জানান, এই ১৯ জনের মধ্যে ১০ বছরের কম বয়সী একটি কন্যাশিশুও রয়েছে। এ ছাড়া ৫ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরেরর মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। স্থাস্থ্য বুলেটিনে জানানো হয়, সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে আরও ২১৪ জন গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৩৬১ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ১৫০ জনকে, বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন মোট ৩ হাজার ৪৩৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১টি ল্যাবে ৬ হাজার ৭৭৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, ঢাকার ইবনেসিনা হাসপাতাল ও প্রাভা হেলথ। করোনায় আক্রান্ত আরও এক চিকিৎসকের মৃত্যু : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আবুল মুকারিরম মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিন মারা গেছেন। গত মঙ্গলবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ইমেজিং সেন্টারের প্রধান রেডিওলজিস্ট ছিলেন। করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর তাকে এক সপ্তাহ আগে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। মহসিন উদ্দিনের ছোট ছেলে স্যামুয়েল মুরসালিন সাংবাদিকদের বলেন, কভিড-১৯ সংক্রমণের পর বাবা নিয়মিত হাসপাতালে যেতেন। আনুমানিক ১২ দিন আগে তার হালকা জ্বর আসে। বাসাতেই তখন চিকিৎসা করা হয়। তিনি আরও বলেন, আগে থেকেই বাবার অ্যাজমার সমস্যা ছিল। তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রথমে ইবনে সিনায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে গত ৬ মে তাকে সিএমএইচে নেওয়া হয়। তখন আমরা জানতে পারি বাবা করোনা রোগী। তাদের পরিবারে মা, বড়ভাই ও ভাবি করোনায় আক্রান্ত বলেও জানান স্যামুয়েল। ইবনে সিনা সূত্র জানায়, মহসিন একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন। ডা. মহসিনকে নিয়ে করোনায় আক্রান্ত এ পর্যন্ত তিনজন চিকিৎসকের মৃত্যু হলো। এর আগে ১৫ এপ্রিল সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার মো. মঈন উদ্দিন ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে এবং গত ৩ মে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মারা যান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর