করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি যে নগদ অর্থ প্রণোদনা দিয়েছেন, তার ফলে অর্থনীতিতে জীবনীশক্তি আসবে বলে মনে করেন দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ পর্যন্ত যত প্রণোদনা দিয়েছেন, তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো, এই ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা প্রদান। এই মানুষগুলো এখন পণ্য কিনবেন। ফলে প্রণোদনা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে ভূমিকা রাখবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, সরকার প্রতি পরিবারকে তাদের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে আড়াই হাজার করে টাকা নগদ অর্থ সহায়তা সরাসরি দিচ্ছে। মোবাইল ফিনান্যান্সিয়াল সার্ভিস বা এমএফএসে টাকা পাঠানো ইতিবাচক দিক। কিন্তু বেনামি মোবাইল ব্যাংক হিসাবে সরকারের দেওয়া নগদ প্রণোদনার টাকা যাচ্ছে কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যেন প্রণোদনার টাকা পান, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থনীতির গুণী এই বিশ্লেষক বলেন, সরকারের এই নগদ অর্থ প্রণোদনা দেওয়ায় মূল্যস্ফীতি একটু বাড়বে। আবার মানুষের হাতে টাকা গেলেও উৎপাদন নেই। তবে অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও ক্ষতি হবে না। ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ একটি কল্যাণ রাষ্ট্র। এখানে যেসব মানুষজন হতদরিদ্র বা অসহায়, তাদের দেখভাল করার দায়িত্ব সরকারের। এ কথা আমাদের সংবিধানে আছে। সংবিধান রাষ্ট্রের সকল মানুষের দেখভালের দায়িত্ব সরকারকে দিয়েছে। তাই করোনাভাইরাসের এমন সময়ে অভাবী মানুষ সহায়তা পেলেন, কল্যাণ রাষ্ট্রে এটাই সরকারের কর্তব্য। অর্থনীতি, মানবসম্পদ ও দারিদ্র্য নিরসনের কাজে অভিজ্ঞ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ বিগত ১২ বছরে যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধন করেছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন সাধারণ মানুষ। তাদের অবদানেই বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। এবার প্রবৃদ্ধির অংশ সেই মানুষের কাছে যাবে। এটাই কল্যাণ রাষ্ট্রের নিয়ম।