শনিবার, ১৬ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
বিশ্ব পরিস্থিতি

মৃত তিন লাখ ছাড়িয়েছে

প্রতিদিন ডেস্ক

মৃত তিন লাখ ছাড়িয়েছে

বিশ্বের সব প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এখন ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। চীনে গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন এ ভাইরাসে মাত্র চার হাজার ৬৩৩ জনের মৃত্যু হলেও মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে আমেরিকা এবং ইউরোপ।

গতকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৪৬ লাখ মানুষ। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্ত প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। একক দেশ হিসেবে করোনায় সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ৮৭ হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে সর্বাধিক প্রাণহানি ঘটেছে ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে মারা গেছেন প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ এবং আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৩৩ হাজার ১৫১ জন। করোনায় যুক্তরাজ্যের পর ইউরোপে মৃত্যুপরীতে পরিণত হয়েছে ইতালি। দেশটিতে প্রাণহানি ঘটেছে ৩১ হাজার ৩৩৮ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ২৫ হাজার মানুষ। এর পর করোনায় মৃত্যুতে শীর্ষে আছে স্পেন। দেশটিতে মারা গেছেন ২৭ হাজার ৩২১ জন। সংক্রমিত হয়েছেন দুই লাখ ৭২ হাজার ৬৪৬ জন। স্পেনের মতোই ইউরোপের আরেক উন্নত দেশ ফ্রান্সেও মারা গেছেন ২৭ হাজার ৪২৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৭৮ হাজার ৮৭০ জন। এ ছাড়া ব্রাজিল ১৩ হাজার ৯৯৯, বেলজিয়ামে আট হাজার ৯০৩, জার্মানিতে সাত হাজার ৯২৮, ইরানে ছয় হাজার ৮৫৪ জনের প্রাণহানি নিয়ে করোনায় মৃত্যুর শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় আছে। এদিকে ইউরোপের পর করোনার নতুন হটস্পট হয়ে উঠছে এশিয়া। বর্তমানে এ মহাদেশে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি এবং মারা গেছেন ২৩ হাজার ৪০৯ জন। মহাদেশের হিসাবে প্রাণহানির এ সংখ্যা ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকার পর চতুর্থ সর্বোচ্চ। এশিয়ায় করোনায় ছয় হাজার ৮৫৪ মৃত্যু নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ইরান। দেশটিতে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ১৪ হাজার ৫৩৩। এর পরই আছে চীন, করোনার উৎপত্তিস্থল এ দেশটিতে মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩৩ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৯২৯ জন। আক্রান্তের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত রোগী পাওয়া গেছে ৭৮ হাজার ৮১০ জন। দুই হাজার ৫৬৪ মৃত্যু নিয়ে এশিয়ায় করোনার নতুন হটস্পট হতে যাচ্ছে ১৩০ কোটি মানুষের দুর্বল স্বাস্থ্যব্যবস্থার এ দেশ।

মৃত্যুশূন্য চীন : করোনাভাইরাস মহামারী বেশ ভালোভাবে সামলে নিয়েছে চীন। গত এক মাসে দেশটিতে আর কেউ এ ভাইরাসে প্রাণ হারাননি। কিছু মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হলেও তাদের কারও অবস্থাই গুরুতর নয়। গতকাল চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে চারজনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। তারা সবাই উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জিলিন প্রদেশের বাসিন্দা। গত কয়েক দিনে চীনের এ অঞ্চলটিতে কিছু রোগী শনাক্ত হচ্ছেন।

এপি জানায়, মহামারী নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা বহাল ও বিদেশিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে চীনে। তবে ক্রমাগত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ব্যবসা-বাণিজ্য ফের চালু করছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি।

উহানে ৩০ লাখ বাসিন্দার করোনা পরীক্ষা : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়া উহানে নতুন করে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর শহরটির এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দাকে পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছিল চীন। গতকাল শহরটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরই মধ্যে ৩০ লাখ বাসিন্দার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, উহান শহরে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্তের পর সেখানকার এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার সবাইকে পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা এ পরিকল্পনার আওতায় ১০ দিনের মধ্যে এ পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। গত বছরের ডিসেম্বরে উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। বিশ্বজুড়ে মহামারীর আকার নেওয়া এ ভাইরাসে প্রায় তিন লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে গত ৩ এপ্রিলের পর উহান শহরে কোনো আক্রান্ত শনাক্ত হয়নি। তবে গত সপ্তাহে শহরটিতে ছয় জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। এর পরই সেখানকার সব বাসিন্দাকে পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১১ সপ্তাহ কঠোর লকডাউনের অধীনে থাকার পর গত আট এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে সেখানকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। স্কুল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে খোলা শুরু হলে স্বাভাবিক হতে থাকে জীবনযাত্রা। তবে একটি আবাসিক এলাকায় নতুন করে ছয়জন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সেই উদ্যোগ হুমকির মুখে পড়েছে। বিবিসি জানায়, উহান কর্তৃপক্ষ সেখানকার সব নাগরিকের নিউক্রেইক এসিড পরীক্ষা করবে। এর মধ্যদিয়ে যাদের উপসর্গ ছাড়াই করোনায় আক্রান্ত তাদের শনাক্ত করা হবে।

এদিকে, জিলিন প্রদেশে নতুন আক্রান্ত চারজন করোনায় আক্রান্তকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে চীন। এ প্রদেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়ছে। জিলিনের শুলান শহরে এরই মধ্যে লকডাউন জারি করা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর