বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ‘আম্ফান’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঝড়ো হাওয়া আকারে এটি সর্বোচ্চ ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসতে পারে। যদিও গতরাতে এটি একই এলাকায় অবস্থান করছিল। ফলে রাতেই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। এ সময় সাগর উত্তাল ছিল।

আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এটি গতকাল বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, ঘূর্ণিঝড়টি ঈদের আগেই উপকূলে আছড়ে পড়বে।

বরিশাল থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানার আগেই বরিশালের বিভিন্ন স্থানে খেতে থাকা পাকা বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। গতকাল বিকালে বরিশাল জেলা দুর্যোগব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভায় সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পাণ মোকাবিলায় পটুয়াখালীতে প্রথম প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টায় জেলা প্রশাসক দরবার হলে জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ২৫টি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।