বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

দিনে ২ লাখ ৩৩ হাজার ফোন

২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার টেস্ট, মৃত আরও ১৬ আক্রান্ত ১৬১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনে ২ লাখ ৩৩ হাজার ফোন

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। দেশে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ৬১৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। একই সময়ে করোনায় মারা গেছেন ১৬ জন। এ নিয়ে দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ৭৩ দিনে প্রাণ গেল ৩৮৬ জনের। আর সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে মোট ২৬ হাজার ৭৩৮ জনের। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী ১৫টা দিন সবচেয়ে বিপজ্জনক। পিক পিরিয়ড চলে আসায় এই সময়ে করোনাভাইরাস সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। তাই এই সময়টায় সবাইকে অতিরিক্ত সচেতন থাকতে হবে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন, নারী তিনজন। তাদের মধ্যে ৭ জন ঢাকা বিভাগের, ৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ৩ জন রংপুর বিভাগের। ১২ জন হাসপাতালে এবং ৪ জন বাসায় মারা গেছেন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃতদের মধ্যে ১০ বছরের কম বয়সী একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে চারজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুজন এবং ৮১-৯০ বছরের মধ্যে একজন। নাসিমা সুলতানা বলেন, একটি বেসরকারি হাসপাতালে নতুন আরেকটি ল্যাব সংযোজিত হওয়ায় এখন ৪৩টি ল্যাবে পরীক্ষা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ২০৭টি নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ২ লাখ ৩ হাজার ৮৫২টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৬ হাজার ৭৩৮ জনের। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৬ জন, সুস্থ হয়েছেন ২১৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ২০৭ জন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ৩০০ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১০০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন তিন হাজার ৮১৬ জন। এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৮৯৩ জন। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান গতকাল এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিদিন যে হারে বাড়ছে, তা আগামী ১৫ থেকে ১৬ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আমরা পিক সময়ের (সর্বোচ্চসীমা) কাছাকাছি চলে এসেছি। হয়তো ঈদের পর সেখানে পৌঁছে যাব। এই সময়টা সবচেয়ে বিপজ্জনক। আমাদের ল্যাবের সংখ্যা ও পরীক্ষার সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রতিদিন ১০ হাজারের কাছাকাছি পরীক্ষা হচ্ছে। চিকিৎসা নিয়ে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, প্লাজমা থেরাপি নিয়ে বিশ্বের ৭টি দেশ কাজ করছে। আমরাও সেটা করতে যাচ্ছি। কয়েকটি ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। দেশের ৫টি প্রতিষ্ঠান ওষুধ উৎপাদনে গেছে। সারা দেশে করোনা রোগীর জন্য ১১০টি হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে। হটলাইনে দিনে দুই লক্ষাধিক ফোন : সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেমন হু হু করে বাড়ছে, একইসঙ্গে বাড়ছে করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হটলাইনে মানুষের ফোন। কেউ উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য ফোন করছেন, কেউ চাইছেন পরামর্শ। গতকাল অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত একদিনেই হটলাইন থেকে ফোন রিসিভ করা হয়েছে দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৪টি। এ পর্যন্ত মোট ফোন রিসিভ করা হয়েছে ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৪টি। হটলাইনে বর্তমানে স্বেচ্ছায় সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চার হাজার ১৯৪ জন চিকিৎসক। ২৪ ঘণ্টায় যোগ হয়েছেন আরও ১১ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের এসএমএস কাজে লাগবে নানা জায়াগায় : অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, যারা কভিড-১৯ পরীক্ষা করাচ্ছেন, তাদের মোবাইলে এসএমএস আকারে ফলাফল পাঠানো হচ্ছে। গ্রামীণফোন গ্রাহকরা এসএমএসটি এমআইএস-ডিজিএইচএস শিরোনামে এবং অন্যান্য অপারেটর ব্যবহারকারীরা ০১৭২৯০২৪৬১২ নম্বর থেকে পাবেন। এই এসএমএসটি স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো অফিশিয়াল এসএমএস হিসেবে গণ্য হবে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে অফিশিয়াল রিপোর্ট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এজন্য নমুনা দেওয়ার সময় সঠিকভাবে মোবাইল নম্বরটি দিতে হবে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর