শিরোনাম
শুক্রবার, ২২ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

বাড়ছে টেস্ট বাড়ছে শনাক্ত

আরও ২২ জনের মৃত্যু ১৭৭৩ জন আক্রান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ৭৭৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এটিই এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্ত হলেন ২৮ হাজার ৫১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ২২ জন। এ পর্যন্ত এক দিনে এটিই সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪০৮ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩৯৫ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৬০২ জন।

গতকাল কভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ এবং তিনজন নারী। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের আটজন, সিলেট বিভাগের তিনজন ও ময়মনসিংহ বিভাগের একজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা শহরের আটজন, ঢাকার অন্যান্য স্থানের একজন, নারায়ণগঞ্জের একজন, চট্টগ্রাম শহরের চারজন, কক্সবাজারের একজন, চাঁদপুরের তিনজন, ময়মনসিংহ শহরের একজন, সিলেট বিভাগের সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার একজন এবং সিলেটের অন্যান্য স্থানের দুজন রয়েছেন। ২২ জনের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬ জন, বাড়িতে মারা গেছেন পাঁচজন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় একজনকে। নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ ছিল ১০ হাজার ১৭৪টি, আর পরীক্ষা করা হয়েছে আগের দিনেরসহ ১০ হাজার ২৬২টি নমুনা। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ১৪ হাজার ১১৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১৫৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন তিন হাজার ৮৯৭ জন। দেশে এখন ৪৭টি ল্যাবে (পরীক্ষাগার) করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এদিকে সারা দেশের কোথায় কোথায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন তার সর্বশেষ খবর জানিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা-

রাজশাহী : জেলায় আরও ছয়জনের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী মহানগরীতেই তিনজনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে দুজন একই পরিবারের। সম্পর্কে তারা বাবা-মেয়ে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তাদের করোনা শনাক্ত হয়। আর দুজনের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলায়। অন্যজন জেলার মোহনপুর উপজেলার বাসিন্দা। বুধবার রাজশাহী জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৫ জন। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়াল ৩১ জনে। বগুড়া : বগুড়ায় পুলিশ সদস্য, কারারক্ষীসহ ১৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের তেমন কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। গতকাল দুপুরে বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বুধবার রাতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ল্যাব থেকে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৭টি রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে জেলার শেরপুর উপজেলায় তিনজন, গাবতলী উপজেলায় চারজন এবং বগুড়া সদরে রয়েছে ১০ জন। শেরপুরে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে শেরপুর থানার এক পুলিশ কনস্টেবল ও বাকি দুজন ঢাকা ফেরত উপজেলার খামারকান্দি এবং কসাইপাড়ার বাসিন্দা। গাবতলী উপজেলায় রামেশ্বরপুর, নাড়ুয়ামালা, দক্ষিণপাড়ার এক দম্পতিসহ চারজন ঢাকা ফেরতই করোনায় আক্রান্ত। বগুড়া সদরে আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে ৬ জন জেলা কারাগারের কারারক্ষী ও বাকি তিনজন ঢাকা ফেরত। এ ছাড়া সদরের মহাস্থানগড় এলাকা থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় এক ব্যক্তিকে (৩৬) উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার করোনা পজিটিভ হয়। বুধবার পর্যন্ত বগুড়া জেলায় মোট আক্রান্ত ১১২ জন। বাগেরহাট : জেলার শরণখোলায় আরও দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরা হলেন উপজেলার কদমতলা গ্রামের অলিউর রহমান (৩০) এবং রাজৈর গ্রামের আসাদুল হাওলাদার (৩৮)। আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আসাদুল এর আগে শনাক্ত হওয়া গার্মেন্টের মালিক আবদুল হাকিমের শ্যালক। ফরিদপুর : ফরিদপুরে আরও ছয়জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ফরিদপুর জেলায় করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১০৩ জন। গতকাল ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাব থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ফরিদপুরে নতুন করে যে ছয়জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো তাদের সবাই পুরুষ। এদের মধ্যে চারজন ফরিদপুর শহরসহ সদর উপজেলার এবং বাকি দুজনের মধ্যে একজন বোয়ালমারী এবং একজন আলফাডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা। হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) : কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে একই পরিবারের তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। জানা যায়, গত ৬ মে  নারায়ণগঞ্জ থেকে মিনতি রানী বর্মণ নামে একজন জ¦র, সর্দি, কাশি নিয়ে বাড়িতে এলে গত ৯ মে হোসেনপুর উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠালে পরীক্ষায় ওই মহিলার করোনা পজিটিভ আসে। পরে তার পরিবারের আরও দুজনসহ মোট তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ওই নারীর মাধ্যমে তার ১৬ বছরের এক মেয়ে ও তার ভাসুরের এক মেয়েসহ একই পরিবারের তিনজন আক্রান্ত হন।

সর্বশেষ খবর