শুক্রবার, ২৯ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চাহিদা বাড়ছে প্লাজমার এখনো সীমিত ডোনার

মাহবুব মমতাজী

চাহিদা বাড়ছে প্লাজমার এখনো সীমিত ডোনার

করোনার চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) প্লাজমা থেরাপির কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরুর থেকেই আক্রান্তদের মধ্যে থেরাপির চাহিদা বেড়েই চলছে। কিন্তু মিলছে না দাতা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্লাজমা দাতা খুঁজে দেওয়ার জন্য সন্ধানী ও বাঁধনের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে। হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ও প্লাজমা থেরাপির সাব কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান গতকাল জানান, ঈদের আগ থেকে এ পর্যন্ত যারা শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন এমন ছয়জন রোগীকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে। এটা করা হয় পরীক্ষামূলকভাবে। থেরাপি দেওয়ার পর তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। প্লাজমা সংগ্রহ শুরুর দিন থেকে গত ২৭ মে পর্যন্ত ১৯ জন করোনা জয়ীর কাছ থেকে প্লাজমা নেওয়া হয়। জানা যায়, ঢামেক হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে প্লাজমা নেওয়া হয়। এদিন প্লাজমা দান করেন কভিড জয়ী দুই চিকিৎসক। তবে এ থেরাপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষামূলকভাবে চলছে প্লাজমার কার্যক্রম। পরীক্ষার নির্দিষ্ট মান উত্তীর্ণ হলে ব্যাপকভাবে এর সঞ্চালন করা হবে। প্লাজমা থেরাপির কার্যক্রম দেখভাল করছে ১২ জনের একটি কমিটি।

হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাছির উদ্দীন এ প্রতিবেদককে জানান, করোনায় ভুগে সুস্থ হওয়া ব্যক্তির প্লাজমা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে ডোনার সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকায় এ কাজ ব্যাপক ভিত্তিতে করা যাচ্ছে না। চিকিৎসকরা বলছেন, কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা এ ভাইরাস মোকাবিলা করে টিকে থাকতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এ অ্যান্টিবডি করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ওই অ্যান্টিবডিই অসুস্থদের সারিয়ে তোলার জন্য ব্যবহার হবে। জানা গেছে, ঢামেক হাসপাতালে যে কভিড-১৯ রোগীরা আছেন তাদের ওপরই আপাতত এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। এ ছাড়া ঢাকার আরও দু-একটি হাসপাতালে রোগীদের ওপর প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সবচেয়ে বড় কেন্দ্র হবে ঢামেক হাসপাতালে। এ ছাড়া বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে কভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা এমন ব্যক্তিদের আহ্বান জানিয়েছে প্লাজমা দিতে এগিয়ে আসার জন্য। দাতার শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহের জন্য একটি বিশেষ কিট প্রয়োজন হয়। ঢামেক সূত্র জানায়, গত ২৭ মে সর্বশেষ তিনজন করোনাজয়ী প্লাজমা দিয়েছেন। তারা হলেন- মাশরুফ তাহমিম মল্লিক ও তার বোন মাহফারা তাসমিম এবং স্বাস্থ্যকর্মী কামরুজ্জামান তৌফিক।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মজিবুর রহমান জানান, হাসপাতালের নতুন ভবন কভিড ইউনিট-২ এ ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে ২৭ মে পর্যন্ত আনুমানিক ৪০০ রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক রোগী আছে করোনার পাশাপাশি তাদের ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে।

এ ছাড়া বেশ কয়েকজন রোগী আইসিইউতে আছেন। ঈদের দুই দিন আগ থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা কয়েকজন রোগীর শরীরে প্লাজমা থেরাপি পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হয়েছে। প্লাজমা দেওয়া রোগীদের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর