আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনা সংক্রমণের দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও জীবন ও জীবিকার তাগিদে লকডাউন শিথিল করেছি। জীবন ও জীবিকার মাঝে ভারসাম্য তৈরি ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে, সামাজিক শৃঙ্খলা সুরক্ষা রাখতে ইতোমধ্যে সরকার সাধারণ ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখানে কিছু পালনীয় শর্ত দিচ্ছি। সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে, স্বাস্থ্যসম্মত বিধি নিশ্চিত করে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল করতে পারবে। গতকাল সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিওবার্তায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ৩১ মে থেকে সরকার গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণপরিবহন পরিচালনায় যাত্রী, পরিবহন ও চালক-শ্রমিকদের সুরক্ষা সুনির্দিষ্টভাবে নিতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, এ ছাড় যেন বিষাদে রূপ না নেয়। মালিক, শ্রমিক, যাত্রী সাধারণ সবার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এ বিষয়ে শুক্রবার (আজ) পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসমূহকে নিয়ে বিআরটিএর সঙ্গে মিটিং করে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত করতে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের অনেক দেশ ক্রমান্বয়ে লকডাউন শিথিল করছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনায় খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই মৃতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায়ে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর অনেক দেশ লকডাউন শিথিল করেছে। কোথাও কোথাও স্বাভাবিক জীবনযাত্রার দিকে যাত্রা শুরু করেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি দেশের তালিকায় থেকেও অর্থনীতির স্বার্থে লকডাউন শিথিল করেছে। জীবন ও জীবিকার মাঝে ভারসাম্য তৈরি, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, সামাজিক শৃঙ্খলা ও সুরক্ষার স্বার্থে এটা দরকার। ইতোমধ্যে সরকার সাধারণ ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই পালনীয় কিছু শর্ত থাকছে যেমন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জরুরি কিছু নির্দেশনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দেশবাসীকে বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি খাতসহ সবাইকে শর্তাবলি কঠোরভাবে প্রতিপালনে অনুরোধ জানাচ্ছি নিজেদের স্বার্থে। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে জীবন-জীবিকার মাঝে সাযুজ্য বিধানের যে প্রয়াস চলছে, তার থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তার সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বে আমরা ইতোপূর্বে অনেক সংকট থেকে উত্তরণ লাভ করেছি। ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ হিসেবে তার দক্ষতার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। আপনারা মনোবল না হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রাখুন। সরকারকে সহযোগিতা করুন। সংকটকে সম্ভাবনায় রূপদানে আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। করোনা সংকটকালে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনাকারীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, এখন আমাদের উচিত ধর্ম-বর্ণ-পেশা ভেদে অদৃশ্য শত্রু করোনা মোকাবিলা করা। করোনা আমাদের কারও বন্ধু নয়, কাজেই এ সংকটকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার কৌশল অবলম্বন হবে আত্মঘাতী।