শিরোনাম
শনিবার, ৩০ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

টাকা-পয়সা দিয়ে মরতে যাচ্ছে, প্রয়োজন সচেতনতা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

টাকা-পয়সা দিয়ে মরতে যাচ্ছে, প্রয়োজন সচেতনতা

ড. এ কে আবদুল মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, লিবিয়ার দুর্ঘটনা আমাদেরকে মানব পাচারের নির্মমতা আরেকবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এর বিরুদ্ধে সারা দেশে এক ধরনের গণসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জা, বদনাম। এই মানব পাচারের ব্যবসা যে কোনোভাবেই হোক বন্ধ করতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছরই মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে। কখনো সমুদ্রপথে সলিলসমাধি। আবার কখনো এভাবে মারা পড়ছে। পাচারের শিকার হয়ে গত বছর যখন সাগরে সলিলসমাধি হয়েছিল তখন আমরা একটি তালিকা পেয়েছিলাম। কারা তাদের পাঠিয়েছিল সেই তালিকায় সেই নামগুলো ছিল। সেই তালিকা অনুসারে স্থানীয় প্রশাসন কিছু কিছু লোককে ধরেছিল। এরপর আমরা আর তাদের খোঁজখবর জানি না। তিনি বলেন, পাচার হচ্ছে চতুর্দিকে। ওদিকেও যাচ্ছে। আবার আমাদের এদিকেও রোহিঙ্গাদের পাচার করা হচ্ছে। কিন্তু একটা লোকেরও শাস্তি হয় না। এই যে কয়দিন পর পর আমরা শুনছি রোহিঙ্গাদের পাচার করা হচ্ছে, কিন্তু কোনো দিন কাউকে শাস্তির কথা আমরা শুনি না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমি বিষয়টি আইনমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আইনমন্ত্রী বলছেন, বিষয়গুলো পুলিশের ওপর নির্ভর করে। এসব সুযোগে পাচারকারীরা ব্যবসা করেই যাচ্ছে। সাধারণ নাগরিকরা এর খপ্পরে পড়ছেন। টাকা-পয়সা দিয়ে মরতে যাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুঃখজনক যে যারা বিদেশে গিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়ছেন তারা যখন দেশে থাকতে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ১০-১২ লাখ টাকা চাইছেন, সেটা তারা পাচ্ছেন না। আবার বিদেশে যাওয়ার জন্য হলে সঙ্গে সঙ্গে তা পাচ্ছেন। এ জন্য গণসচেতনতা প্রয়োজন। মা-বাবা-ভাই-বোন যারা টাকা দিয়ে থাকেন তাদেরও টাকা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। বিদেশে যেতে হলে বৈধভাবেই যেতে হবে। আমরা কাউকে অবৈধভাবে পাঠাতে চাই না। এটা আমাদের জন্য লজ্জা, বদনাম। যারা এ ধরনের অবৈধ ব্যবসা করছেন তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এদের জেলে পাঠিয়ে ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানব পাচারের যে আইন আছে, তা বেশ কঠিন। এতে পাচারকারীদের কঠোর শাস্তি হওয়ার কথা। কিন্তু এ সংক্রান্ত মামলাগুলোর যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়, তা এতটাই দুর্বল হয় যে, বিচারকরা তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এক্ষেত্রে দায় সবারই। বিমানবন্দর, পুলিশ, প্রশাসন সবারই।  সবাই মিলে সঠিক দায়িত্ব পালন না করলে মানব পাচার বন্ধ হবে না। বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের লোকজন বহু লোককে হেস্তনেস্ত করেন, কিন্তু এরপরও এই পাচারকারীরা লোক পাঠায় কীভাবে। শুনেছি যারা গেছে তারা ঢাকা বিমানবন্দর দিয়ে বা বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে দুবাই হয়ে আলজেরিয়া হয়ে তারপর গেছে লিবিয়ার মরুভূমিতে। এই ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। এটা আমাদের বদনাম, দেশের জন্য লজ্জা।

সর্বশেষ খবর