সোমবার, ১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

শঙ্কা নিয়ে কাজে চাকরিজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ার মধ্যেই অনেকটা উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যেই খুলেছে সরকারি-বেসরকারি  অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা ও শেয়ারবাজার। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে গতকালই প্রথমবারের মতো প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়সহ অন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। পুরনো চেহারায় দেখা গেছে সচিবালয়কে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা অফিস করেছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসেছেন নিজেদের কর্মস্থলে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ নিয়ে ছিল উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক। যদিও তারা সতর্কতা অবলম্বন করেই অফিস করেছেন। যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রধান ফটক দিয়ে হেঁটে সচিবালয়ে প্রবেশ করছেন, তাদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়েছে প্রবেশ পথেই। তবে গতকাল কোনো দর্শনার্থী সচিবালয়ে ঢুকতে পারেননি। সাংবাদিকের প্রবেশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হলেও প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে যারা অফিস করছেন তারা অনেকেই সংক্রমণের আশঙ্কা ও আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, যেসব কর্মকর্তা গাড়ি নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করছেন তাদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে না। তারা সরাসরি অফিস কক্ষে যাচ্ছেন। সংক্রমণ শঙ্কায় সতর্কতা নিলেও কেউ যদি সংক্রমিত হয়ে থাকেন তা বোঝার উপায় নেই- ভয়টা এখানেই। এ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কে রয়েছেন। সচিবালয়ে বিভিন্ন ভবনের লিফটগুলোর সামনে নির্দেশনা সংবলিত লিফলেট সাঁটানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, লিফটে চড়লে বিপরীত দিকে মুখ করে দাঁড়াতে। কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সবাই মাস্ক ব্যবহার ও অন্যান্য সতর্কতা অবলম্বন করেই অফিস করছেন।

টানা বন্ধের পর প্রথম দিনে কৃষিমন্ত্রী, ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দীন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এবং পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম অফিস করেছেন। একইভাবে অফিস করছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, ভূমি সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কে এম আবদুস সালাম, বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. নূর-উর-রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব নরেন দাস, সমাজকল্যাণ সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল। প্রসঙ্গত, করোনভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। যা পর্যায়ক্রমে ৩০ মে পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

সর্বশেষ খবর