বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় গেল আরও ৩৭ প্রাণ শনাক্ত ২৬৯৫

বিশেষ প্রতিনিধি

করোনায় গেল আরও ৩৭ প্রাণ শনাক্ত ২৬৯৫

মহামারী করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বাংলাদেশেও প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭৪৬ জনে। এ ছাড়া এক দিনে দেশে আরও ২ হাজার ৬৯৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল সংখ্যা ৫৫ হাজার ১৪০ জনে।

গতকাল করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ৪ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ১২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৩ জন ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ৩১ জন এবং বাসায় ৫ জন মারা গেছেন। মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন একজন। এক দিনে করোনা শনাক্তে ১৫ হাজার ১০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ৫০টি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৫১০টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩টি। নাসিমা সুলতানা আরও জানান, ২৪ ঘণ্টায় ৪৭০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৫৯০ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ০২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

এদিকে সারা দেশের কোথায় কোথায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন এবং নতুন রোগী শনাক্ত হলেন এবং তার সবশেষ খবর জানিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে নতুন ২০৬ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে করা নমুনা পরীক্ষায় এ সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর মধ্যে মহানগরে ৯ জন এবং উপজেলার ৫০ জন। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের সাতটি নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে একজনের। চার ল্যাব মিলিয়ে এ দিন চট্টগ্রাম জেলার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মোট ৬২১টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় ১১৯ জন এবং বিভিন্ন উপজেলায় ৮৭ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। উপজেলাগুলোর মধ্যে পটিয়ায় সর্বোচ্চ ৪৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল তিন হাজার ৩৯৯ জনে।

রাজশাহী : জেলা রেজিস্ট্রার ইলিয়াস হোসেন (৫৫) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়। এ দিন আরও একজনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এ ছাড়া এ দিন দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় এক নারী পুলিশ সদস্যের করোনা পজিটিভই পাওয়া গেছে। তিনিও রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে সর্বোচ্চ ১৬ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এদের মধ্যে একজনের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়। রামেক হাসপাতালের ল্যাবে নতুন দুজন শনাক্ত হওয়ায় জেলায় এখন আক্রান্তের সংখ্যা ৬১ জন। এর মধ্যে রাজশাহী মহানগরীতে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১২ জন। রাজশাহীতে আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১৩ জন।

বগুড়া : বগুড়ার ১৪ পুলিশ ও এক আইনজীবীসহ ৫৭ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। বগুড়ায় এ পর্যন্ত প্রাপ্ত নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্তের রেকর্ড এটি। মঙ্গলবার রাতে বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে বগুড়া সদর থানা ও ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ১৪ জন পুলিশ সদস্য ছাড়াও বগুড়া বারের এক আইনজীবী রয়েছেন।

কুমিল্লা : নগরীতে ৪৮ জনসহ করোনায় কুমিল্লা জেলায় নতুন আক্রান্ত ৬৭ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ১৬৩ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নগরীতে ৪৮ জন, চৌদ্দগ্রামে একজন, লাকসামে সাতজন, আদর্শ সদরে চারজন, বুড়িচংয়ের সিএমএইচে দুজন, সদর দক্ষিণে একজন এবং লালমাইয়ে চারজন রয়েছেন।

নরসিংদী : জেলায় নতুন করে আরও ৫১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে নরসিংদীতে করোনা রোগী ৬১৪ জন। এর মধ্যে ৩৭ জন নরসিংদী সদর উপজেলার, ৩ জন পলাশ উপজেলার, ২ জন মনোহরদী উপজেলার, ৫ জন শিবপুর উপজেলার ও ৪ জন বেলাব উপজেলার।

টাঙ্গাইল : জেলায় নতুন করে ৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর, মির্জাপুর ও বাসাইলে দুজন করে, ঘাটাইল ও ভূঞাপুরে একজন করে রয়েছেন। এ নিয়ে বুধবার সকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মোট ১৯১ জন।

দিনাজপুর : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত নারীর পজিটিভসহ ২৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দিনাজপুর সদরে ১০ জনের ৬ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী, বিরামপুরে একই পরিবারের ৪ জনসহ ৬ জন, চিরিরবন্দরে মৃত এক নারীর (৪২) পজিটিভসহ ৪ জন,  বিরলে ১ জন, বীরগঞ্জে ২ জন এবং খানসামায় ১ জন পুরুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।  এ নিয়ে দিনাজপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫৫ জন। যার মধ্যে পুরুষ ১৮৪ জন, নারী ৫৯ জন ও শিশু ১২ জন রয়েছে।

নেত্রকোনা : জেলায় চিকিৎসকসহ আরও ৬ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে খালিয়াজুরী হাসপাতালের চিকিৎসক ও কেন্দুয়া উপজেলার একজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এই নিয়ে জেলায় মোট ২৫৫ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো। তাদের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু রয়েছে। আর ৮৩ জন সুস্থ  হয়েছেন।

গোপালগঞ্জ : জেলায় আরও ১৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২২২ জনে দাঁড়াল। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে গোপালগঞ্জ সদরে ৪ জন, মুকসুদপুরে ৬ জন, কোটালীপাড়ায় ৩ জন, কাশিয়ানী উপজেলায় ২ জন ও টুঙ্গিপাড়ায় ১ জন রয়েছেন। জেলায় আক্রান্ত ২২২ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০২ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১৯ জন ও ১ জন মারা গেছেন।

সর্বশেষ খবর