শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
খুলনা

বিনা চিকিৎসায় একের পর এক মৃত্যু

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাসেবা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা না পেয়েই এখানে অন্তত ২৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২৯ জনের। স্বজনদের অভিযোগ, করোনা সাসপেকটেড ইউনিটে সময়মতো চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের পাওয়া যায় না। করোনা ইউনিট হওয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও আসেন না। ফলে এক প্রকার বিনা চিকিৎসায় মারা যায় রোগী। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বিএমএ, খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম অভিযোগ করেন, সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় খুলনায় বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে। করোনা চিকিৎসায় ডেডিকেটেট হাসপাতালে আইসিইউ ভেন্টিলেটর স্থাপন করা হয়েছে কিন্তু জরুরি চিকিৎসায় সেখানে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নেই। বিকল্প উপায়ে অক্সিজেন ব্যাংক সিস্টেম চালু করতে বর্তমানে একই সঙ্গে ২৮টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন হয়। অব্যবস্থাপনার কারণে খুমেক হাসপাতালে ‘করোনা নেই’ সনদ নিতেই ফ্লু কর্নারে অপেক্ষা করতে হয় ৩-৪ দিন। সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে মুমূর্ষু রোগীকে এখানে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিত্রটা আরও ভয়াবহ। চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্রাকটিস বন্ধ করে দেওয়ায় করোনা আক্রান্ত না হয়েও অসংখ্য রোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জানা যায়, খুলনা পিসিআর ল্যাবে একদিনে সর্বোচ্চ ১৯২টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত এখানে ১ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হওয়ার অপেক্ষায় আছে। ল্যাবের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষা করলেও তা’ শেষ হতে পাঁচদিন সময় লাগবে। এ কারণে বিকল্প পিসিআর মেশিন স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহম্মেদ। তিনি বলেন, সংক্রমের ভয়ে অনেক চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে আগ্রহী নয়। ‘করোনা নেই’ সনদ নিতেই যদি দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে আরও ভোগান্তি বাড়বে। এদিকে দায়িত্ব অবহেলার কারণে খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী মো. রেজা সেকেন্দার জানান, নমুনা টেস্টের প্রতিবেদন না দেখেই তিন জন পজেটিভ রোগীকে নেগেটিভ সনদ দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর