শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
বরিশাল

ডাক্তাররা রোগী দেখেন মধ্যস্থতাকারী রেখে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা এখনো কাটেনি। স্বনামখ্যাত ডাক্তাররা ফিরে আসেননি ব্যক্তিগত চেম্বারে। এ কারণে মধ্যম সারির ডাক্তারদের চেম্বারে রোগীদের ভিড়। সরকারি হাসপাতালের আন্তবিভাগে ভর্তি থাকা রোগীর সেবায় সময় না দিলেও ক্লিনিক কিংবা বেসরকারি হাসপাতালের মালিক ডাক্তাররা তাদের নিজ নিজ ক্লিনিক-হাসপাতালে রোগী দেখছেন চুটিয়ে। এদিকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের বেশির ভাগ ডাক্তার রোগী দেখছেন মধ্যস্থতাকারীর (এমএলএসএস) সহায়তায়। এতে প্রকৃত সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। অন্যদিকে খ্যাতনামা ডাক্তাররা ব্যক্তিগত চেম্বারে না বসায় মধ্যম সারির ডাক্তারদের চেম্বারে রোগীদের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। উপযুক্ত ডাক্তার না পেয়ে সার্জারি ডাক্তারের কাছে হৃদরোগী নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বরিশালে। এদিকে করোনা দুর্যোগ শুরুর পর শেরেবাংলা মেডিকেলের আন্তবিভাগে রোগী ভর্তি কমে গেলেও গত কয়েকদিন ধরে রোগীর সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে। করোনার আগে ১ হাজার শয্যার হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ২ হাজার ২০০ রোগী ভর্তি থাকলেও করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ভর্তি রোগী ৩৫০ জনে নেমেছিল। সরকারিভাবে অফিস-আদালত এবং লকডাউন খুলে দেওয়ায় গত কয়েক দিনর ধরে শেরেবাংলা মেডিকেলে আবার বাড়ছে ভর্তি রোগী এবং বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা। গতকাল শেরেবাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে ৪৫ জনসহ  মেডিকেলে মোট রোগী ভর্তি ছিল প্রায় ১ হাজার ২০০। আগে বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন দেড় থেকে ২ হাজার রোগী ডাক্তার দেখাতে এলেও করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা নেমেছিল ৬০ জনে। গতকাল বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখিয়েছেন প্রায় ৪০০ রোগী। আগে আন্তবিভাগে ভর্তি থাকা রোগীদের শয্যা পাশে ঘুরে সিনিয়র চিকিৎসকরা রোগীর কাছে খুঁটিনাটি জিজ্ঞাসা করে ব্যবস্থাপত্র দিলেও এখন পদ্ধতি পাল্টেছেন তারা। নামমাত্র রোগী দেখে দ্রুত ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। আন্তবিভাগে কোনোমতে ডাক্তারি সেবা চললেও চিকিৎসা সেবার নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন মেডিকেলে বহির্বিভাগের মধ্যম সারির ডাক্তাররা। টিকিট কেটে কোনো রোগী বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখাতে গেলে তাকে সরাসরি ডাক্তারের কক্ষে যেতে দেন না অনেক চিকিৎসক। সামনে শৃঙ্খলা ও রেজিস্ট্রার রক্ষার দায়িত্বে থাকা এমএলএসএ’র মাধ্যমে রোগীর সমস্যা শোনেন ডাক্তাররা। এমএলএসএস’র মাধ্যমে দূর থেকে রোগীর সমস্যা শুনে তাকে (এমএলএসএস) দিয়েই ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ লিখিয়ে দেন ডাক্তাররা। পরে ওই ব্যবস্থাপত্রে একটি নমুনা স্বাক্ষর দিয়ে ব্যবস্থাপত্রের বৈধতা দেন ডাক্তাররা।

সর্বশেষ খবর