শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় পিছিয়ে

-অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় পিছিয়ে

বিএনপিপন্থি চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা চিকিৎসা সেবায় বাংলাদেশ পিছিয়ে। এমনকি করোনা টেস্টও দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনি¤ন্ডেœ। এর মূল কারণ হচ্ছে, আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পুরোপুরি সমন্বয়ের অভাব। আমাদের পর্যাপ্ত টেস্ট জরুরি। তাছাড়া করোনায় বেশি পরিমাণ মৃত্যুর কারণ হচ্ছে করোনা রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন দেওয়া হয় না। সরকারি বেসরকারি অধিকাংশ হাসপাতালেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন নেই।

গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন। ডা. হারুন বলেন, করোনাকালীন আমরা যথেষ্ট সময় পেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা করোনা রোগীদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে হাসপাতাল তৈরি করতে পারিনি। সরকার গেল সপ্তাহে সব হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে পরিপত্র জারি করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো যে সরকারি হাসপাতালেই করোনা চিকিৎসা হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজারবিশিষ্ট শয্যা পড়ে আছে। সেখানে প্রায় ১৫০০ চিকিৎসক বেকার বসে আছেন। তাদেরও সরকার কাজে লাগাতে পারে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই।

ড্যাব সভাপতি বলেন, চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়েও চলছে দুর্নীতি আর চুরি। চিকিৎসকসহ করোনা চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত সবার পিপিই নিয়েও চলছে হরিলুট। গণমাধ্যমে এসেছে ৭০০ টাকার পিপিই কেনা হচ্ছে ২২০০ টাকায়। তাও আবার মানসম্মত নয়। এ পর্যন্ত প্রায় ১২০০ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ২০ জন চিকিৎসক মারাও গেছেন। চিকিৎসাধীন ডাক্তারের অনেকেই ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছেন। স্বাস্থ্যসেবায় চরম অব্যবস্থাপনায় করোনায় আমাদের বেশি মানুষকে প্রাণ হারাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, অধিকাংশ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন নেই। কিন্তু করোনাকালীন আমরা পর্যাপ্ত সময় পেয়েছিলাম। সরকার চাইলে সব সরকারি ও বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে পারত। এজন্য শুধু প্রতিটি হাসপাতালে একটি মানসম্মত মেশিনই যথেষ্ট। আর আল্লাহ প্রদত্ত বাতাস থেকেই অক্সিজেন সৃষ্টি হয়। এর জন্য অন্য কোনো উপাদানের প্রয়োজন নেই। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট দিগুণ করে তার সুষম বণ্টন করা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন ডা. হারুন আল রশীদ। তার মতে, চলতি বাজেটেও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট কম ছিল। আসন্ন বাজেটেও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট তুলনামূলকভাবে কম। এটা  কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে করোনা চিকিৎসায় পর্যাপ্ত টেস্ট করানো হচ্ছে না। এ কারণে কী পরিমাণ আক্রান্ত হতে পারে তার প্রাথমিক কোনো ধারণাও পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এমনটা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ দাতাসংস্থাগুলো যে ঋণ দিচ্ছে তাও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার কাজে বেশি ব্যবহার হচ্ছে না। কর্মপরিকল্পনা, কাউন্সেলিংসহ আনুষঙ্গিক কাজেই এ ঋণের টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রয়োজন ছিল বেশি পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া।

সর্বশেষ খবর