বুধবার, ১০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

উপস্থিতি সীমিত সচিবালয়ে

কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে অফিস করছেন সবাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

কম সংখ্যক জনবল উপস্থিতির কারণে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এখনো পুরনো চেহারাই ফিরেনি সচিবালয়। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবার মধ্যেই কমবেশি আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা কাজ করছে। অফিসিয়ালি ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতির বিষয়ে কোনো রকম নির্দেশনা না থাকলেও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর থেকে প্রায় প্রত্যেক মন্ত্রণালয়েই ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত হচ্ছেন। তবে লিখিত নির্দেশনা না পাওয়ায় কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী শঙ্কা নিয়েই তাদের কর্মস্থলে উপস্থিত হচ্ছেন।

টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি শেষে গত ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস আদালতসহ সবকিছু খুলে দেয় সরকার। এর একদিন পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার পাশাপাশি তারা সর্বোচ্চ সতর্কতার জন্য ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। যাদের জরুরি কাজ আাছে শুধু তারাই আসবেন। বাকিরা বাসায় বসেই অনলাইনে অফিস করবেন। গতকাল সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তারা সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এখন পর্যন্ত অফিস করছেন। তবে তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। এটিকে সঙ্গী করেই তারা কাজ করছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, তিনি ঈদের পর থেকে টানা অফিস করছেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দফতরের প্রায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত অফিস করছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, অফিসে না এসেও উপায় নেই। তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের মন্ত্রণালয়ে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা নিয়মিত অফিস করছেন। কিন্তু প্রায় সবার মধ্যেই আতঙ্ক আছে। শংকা নিয়ে সবাই কাজ করছেন। তিনি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভয়টা অফিস সহকারিদের নিয়ে। তারা তো অনেকেই ব্যাচেলর। মেসে থাকে। এ কারণে সতর্কতার জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রত্যেক দপ্তরেই প্রতিদিন একজনের বেশি অফিস সহকারিকে আসতে মানা করা হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ে অবশ্য ৮০ থেকে ৯০ ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করছেন। এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও সচিব নিয়মিত অফিস করছেন। এখানে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তার উপস্থিতির বিষয়টি এখনও অনুসরণ করা হয়নি। কেন সকল কর্মকর্তা নিয়মিত উপস্থিত হচ্ছেন জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ২৫ শতাংশ কর্মকর্তার উপস্থিতির কথা বললেও এ রকম কোনো নির্দেশনা আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাইনি। এ কারণে সবাই অফিস করছেন। তবে অফিস সহকারীদের উপস্থিতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি বিভাগের কর্মকর্তারা ভাগ করে অফিস করছেন। অর্থাৎ প্রত্যেক বিভাগের কর্মকর্তারা একদিন করে অফিস করছেন। মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দীনও মাঝে মধ্যে অফিস করছেন।  স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও সচিব মো. হেলালুদ্দীন প্রায় নিয়মিতই অফিস করছেন। ওই মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, তারা সরকারি নির্দেশনা অনুয়ায়ি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে নিয়মিত অফিস করছেন। খোঁজ নিয়ে নিয়ে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জানা গেছে, প্রায় সব  মন্ত্রণালয়েই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত হচ্ছেন। কেউ কেউ দ্রুত কাজ শেষ করে দ্রুতই বেরিয়ে পড়ছেন। যাদের জরুরি কাজ শুধু তারাই অফিস করছেন। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে এখন সচিবালয়ে খুব একটা ভিড় নেই। দর্শনার্থী প্রবেশ তো পুরোপুরিই নিষিদ্ধ।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর