শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা মোকাবিলায় উদ্যোগ

থোক বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা স্বাস্থ্যে মোট ৪১ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯ মোকাবিলায় জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য খাতে মোট ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

করোনাভাইরাসের কারণে এবার স্বাস্থ্য খাতে অতীতের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাজেটে বেশ্বিক মহামারী কভিড-১৯ মোকাবিলায় পরীক্ষা কিট আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কভিড-১৯ নিরোধক ওষুধের ক্ষেত্রেও উল্লিখিত তিন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্য কমবে।

বাজেটের আকার বিবেচনায় বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে আসছে অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল ব্যয়ের ৫ দশমিক ১ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে স্বাস্থ্য খাতের ২৯ হাজার ২৪৫ কোটি টাকার বাইরে বাজেটে করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া করোনা মোকাবিলায় এডিবির সহায়তায় এক হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এক হাজার ১২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানান তিনি। বাজেট বক্তৃতার অর্থমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে পৃথিবী সংকটময় সময় অতিক্রম করছে, বাংলাদেশও এর বাইরে নায়। মার্চে দেশে প্রথম রোগী শনাক্তের পর সরকার কভিড-১৯ মোকাবিলায় নানামুখী উদ্যোগ  নিয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে বিভিন্ন আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত, ল্যাবরেটরি স্থাপন ও চিকিৎসা সেবা উন্নত করতে ৫২৯ কোটি টাকা জরুরি ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুজনিত কারণে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মানীবাবদ ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দুই হাজার ডাক্তার ও ছয় হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাজস্ব খাতে ১২০০ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ১৬৫০ মেডিকেল টেকনিশিয়ানসহ তিন হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আরও তিন হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী স্বাস্থ্য শিক্ষা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি খাতের গবেষণার উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ২০১৭-২২ মেয়াদে এক লাখ ১৫ হাজার ৪০০ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৮৫৪ ইউনিয়নে সার্বক্ষণিক নিরাপদ প্রসবসেবা এবং ৭২টি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে জরুরি প্রসূতিসেবা চালু করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে ৪০টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র, ২৫টি ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র, তিনটি ২০ শয্যার হাসপাতাল, তিনটি ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লায় একটি ১০০ শয্যার শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৩ হাজার ৮১২টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে নতুন ১০ শয্যা বিশিষ্ট ৭০টি এমসিডব্লিউসি নির্মাণ, আরও ২৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ (পুনর্নির্মাণসহ), পুরনো দুই হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আধুনিকায়ন এবং নতুন এক হাজার ২৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর