শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক

বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন ঘটেনি : সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন ঘটেনি : সিপিডি

মোস্তাফিজুর রহমান

মহামারী করোনা ভাইরাসের সময়ে নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) জন্য প্রস্তাবিত যে বাজেট দেওয়া হয়েছে তাতে বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন হয়নি মনে করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গতকাল সন্ধ্যায় প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটি এ অভিমত দেয়। সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে যে অনুমিত এ বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে যা কাজ করেছে তা বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন করে না। কারণ সম্পদ আহরণ থেকে সম্পদ ব্যয়ের যেসব প্রস্তাব আমরা দেখেছি, তাতে বিজনেস অ্যাজ ইউজুয়াল চিত্র ফুটে উঠেছে।’

তিনি বলেন, ‘মনে হয়েছে আমরা খুব দ্রুত কভিড-১৯ থেকে পরিত্রাণ পাব এবং অর্থনীতি তার পুরনো ধাঁচ ফেরত যাবে। কিন্তু বর্তমানে যে স্বাস্থ্যঝুঁকি আমরা দেখছি, তাতে এত দ্রুত কভিড থেকে পরিত্রাণ পাব বলে মনে হচ্ছে না। কভিডের এই চলমান অভিঘাত আমরা স্বাস্থ্য খাতে, সামাজিক খাতে দেখছি। আমরা একটা মানবিক ঝুঁকি হিসেবে দেখছি। আর অর্থনৈতিক ঝুঁকি তো আছেই। এই ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য বাজেটে যে ধরনের কাঠামো থাকা দরকার, আমাদের মনে হয়েছে তা পরিপালন করা হয়নি।’

তিনি বলেন, বাজেটে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার সম্পদ আহরণের প্রাক্কলন করা হয়েছে। চলমান সংশোধিত বাজেটে সম্পদ আহরণের কথা বলা হয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এটা এর চেয়ে হয়তো ৯ শতাংশ বেশি হতে পারে। কিন্তু প্রকৃত যে আয় হবে বলে আমরা ধারণা করছি, তা আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি এ বছর হবে না। সেটি যদি বিবেচনায় নেওয়া হয়, তাহলে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৫০ শতাংশের মতো বেশি সম্পদ আহরণের একটা লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে।

সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিকে চালু করার জন্য ১ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার ১৯টি প্যাকেজ দিতে হচ্ছে। সেখানে যে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার একটা রাজস্ব বাজেট আমরা দিচ্ছি, এই অনুমিত বাজেট আমাদের কাছে খুব বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। এটি দুর্বল কাঠামো নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। কারণ কাঠামোটা একটা বাস্তবসম্মত সম্পদ আহরণের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি। ফলে ঘাটতি অর্থায়নের ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে।’ বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা আরও বাড়ানো উচিত ছিল বলে অভিমত দিয়েছে সিপিডি। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সামাজিক সুরক্ষার জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা আরও বাড়ানোর দরকার ছিল। অনেকের আয় কমে গেছে, বেকার হয়ে গেছে। ৫০ লাখ মানুষকে আড়াই হাজার কোটি টাকা সরাসরি ক্যাশ ট্রান্সফারের কথা বলা হচ্ছে। আমরা মনে করি এসব খাত আরও সম্প্রসারণের প্রয়োজন ছিল। অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এবার আরও সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এটা নৈতিক দিক থেকেও কাম্য নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও এটা খুব একটা লাভজনক নয়। রাজনৈতিক দিক থেকেও এটা বর্তমান সরকারের পক্ষে যাবে বলে মনে হয় না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সর্বশেষ খবর