শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক

বাস্তবমুখী-ব্যবসাবান্ধব বলছেন ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবমুখী ও ব্যবসাবান্ধব বলে অভিহিত করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। তারা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর হ্রাসসহ বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা অর্জন করা কঠিন। তবে ব্যবসাবান্ধব এ বাজেট বাস্তবায়ন হলে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের যে ক্ষতি, তা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

গতকাল প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ সব কথা বলেছে দেশের বাণিজ্য সংগঠনগুলো। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বাস্তবমুখী বলে মনে করছে তৈরি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সংগঠনটি বলেছে, তৈরি পোশাকশিল্পে উৎসে কর আরও কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ হারে আরও পাঁচ বছর অব্যাহত রাখার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। অর্থমন্ত্রী করোনার বাস্তবতার আলোকে গতানুগতিকতার বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। শ্রমিকদের সম্ভাব্য আর্থিক অভিঘাত থেকে সুরক্ষার জন্য ৫০০০ কোটি টাকার একটি মজুরি ঋণ সহায়তা প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে শিল্প একটি তাৎক্ষণিক বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হয়েছে। আশা করি, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা ও বৃহৎ শিল্পের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ সহায়তা প্যাকেজ দুটিও বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে বিতরণ করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা কৃতজ্ঞ যে, বাজেট প্রস্তাবনায় তৈরি পোশাক শিল্প খাতে রপ্তানির বিপরীতে যে নগদ সহায়তাগুলো চালু আছে সেগুলো অব্যাহত রাখার এবং পাশাপাশি অতিরিক্ত এক শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তাও অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) বলেছে, এই ব্যবসাবান্ধব বাজেট বাস্তবায়ন হলে করোনার ক্ষতি পোষানো সম্ভব। বাজেটে করপোরেট কর হ্রাসসহ বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা অর্জন করা কঠিন। তবে ব্যবসাবান্ধব এ বাজেট বাস্তবায়ন হলে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের যে ক্ষতি, তা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

সংগঠনটি আরও বলেছে, যেহেতু বাজেটের ঘাটতি ব্যয় মেটাতে আর্থিক খাতের ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অর্থনীতিতে করোনা ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংকিং খাত ব্যাপকভাবে জড়িত, তাই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও সাবেক বিশিষ্ট ব্যাংকারদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী আর্থিক খাত পরামর্শক কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করছি, যা করোনা দুর্যোগের সময়ে আর্থিক খাত সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য দিক-নির্দেশনা দেবে। প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও খেলাপি ঋণ আদায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করছি। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত ব্যতীত বিকল্প অর্থ সংস্থানের জন্য শক্তিশালী পুঁজি বাজার ও বন্ড মার্কেট গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বিদেশি দাতা সংস্থার কাছ থেকে শহজ শর্তে ঋণ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বাংলালিংক-এর সিইও এরিক অস বলেন, ‘আমাদের গ্রাহকরা ইতিমধ্যেই উচ্চ করের বোঝা বহন করে টেলিকম সেবা গ্রহণ করছেন। এই পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হলে তা অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের প্রভাবিত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে পড়বে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর করোনা মহামারীর অর্থনৈতিক প্রভাবের কথা বিবেচনা করে ইন্টারনেটের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারেরও দাবি জানান। এ ছাড়া তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়িকভাবে এখনো লাভজনক অবস্থানে যেতে পারিনি, তাই সরকারকে অনুরোধ করব, আমাদের আয়ের ওপর ন্যূনতম করের হার যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়।’

সর্বশেষ খবর