সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

চীনে ফের সংক্রমণের শঙ্কা, মৃত্যুর রেকর্ড ভারত-পাকিস্তানে

প্রতিদিন ডেস্ক

চীনে ফের সংক্রমণের শঙ্কা, মৃত্যুর রেকর্ড ভারত-পাকিস্তানে

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা চার লাখ ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে প্রায় ৮০ লাখ। এ দিকে করোনার হানা থেকে বেরিয়ে আশা চীনে নতুন করে সংক্রমণের শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত ও পাকিস্তানেও রেকর্ড মৃত্যু ও আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১ লাখ ৪২ হাজার ২২৪। মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ৫২৭ জনের। আক্রান্তের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা আট লাখ ৫০ হাজার ৭৯৬। এর মধ্যে ৪২ হাজার ৭৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ২০ হাজার ১২৯। এর মধ্যে ছয় হাজার ৮২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ১৩২। এর মধ্যে চার হাজার ৬৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

চীনে ফের সংক্রমণের শঙ্কা : চীনে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশটির মূল ভূখন্ডে গত শনিবার নতুন করে ৫৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এপ্রিলের পর এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, রাজধানীতে নতুন করে ৩৮ জন দেশীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছে। ১৯ জন বাইরে থেকে এসেছেন। চীনে নতুন আক্রান্ত ৫৭ জনের মধ্যে ৩৬ জনই বেইজিংয়ের। তবে শনিবার কারও মৃত্যু হয়নি। দুই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের প্রথমে চীন কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বেইজিংয়ের দক্ষিণাংশের মাংস ও সবজির বাজার থেকে নতুন করে এটির সংক্রমণ শুরু হয়। গত বছর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে সারা বিশ্বে সব দেশেই ছড়িয়েছে এ ভাইরাস। ভারতে মৃত্যু নয় হাজার ছাড়াল : ভারতে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১২ হাজার মানুষের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। শনিবার থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে কভিড-১৯ আক্রান্ত ৩১১ জনের মৃত্যুও হয়েছে। এরাসহ প্রাণঘাতী ভাইরাসটি দেশটির নয় হাজার ১৯৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। একদিনে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৯২৯ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশটিতে এখন শনাক্ত হওয়া আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ২০ হাজার ৯২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ভারতে একদিনে এত কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়নি। এ নিয়ে পরপর দুই দিন দেশটিতে শনাক্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজারেরও বেশি হলো। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর এক তৃতীয়াংশই মিলেছে মহারাষ্ট্রে। পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে রবিবার সকাল পর্যন্ত এক লাখ চার হাজার ৫৬৮ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তামিলনাড়ুতেও শনাক্ত আক্রান্ত ৪২ হাজার পেরিয়ে গেছে। রাজধানী দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯ হাজার ছুঁইছুঁঁই করছে। ভারতের মোট কভিড-১৯ রোগীর দুই-তৃতীয়াংশই মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি, গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশে শনাক্ত হয়েছে। এই পাঁচটি রাজ্যের প্রধান শহরগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। নতুন করোনাভাইরাসে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুও হয়েছে মহারাষ্ট্রে। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, শতকোটির বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ভারতে লকডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই শনাক্ত আক্রান্ত আগের দিনের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। পাকিস্তানে আক্রান্তের রেকর্ড : পাকিস্তানে শনিবার ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ছয় হাজার ৮২৫ জন; যা দেশটিতে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ২৩০ জনে।

গতকাল পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ৮০ জন মারা গেছেন এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৮২৫ জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ৬৩২ জনে পৌঁছেছে। পাকিস্তানে করোনার ভয়াবহ প্রকোপ শুরু হয়েছে পাঞ্জাব এবং সিন্ধ প্রদেশে। এ দুই প্রদেশেই আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখের বেশি। পাক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, পাঞ্জাবে ৫২ হাজার ৬০১ এবং সিন্ধ প্রদেশে ৫১ হাজার ৫১৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া খাইবার-পাখতুন খাওয়ায় ১৭ হাজার ৪৫০, বেলুচিস্তানে আট হাজার ২৮, ইসলামাবাদে সাত হাজার ৯৩৪, গিলগিট-বাল্তিস্তানে এক হাজার ৯৫ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৬০৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর