সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
চূড়ান্ত হচ্ছে রেড জোন

আসছে ছুটির প্রজ্ঞাপন থাকছে নতুন নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কোন কোন এলাকা রেড জোনের আওতায় তা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন জোন চূড়ান্ত হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। আর চূড়ান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর গতকালও বলেছে, বিভিন্ন রেড জোন চূড়ান্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে যেসব খবর গতকালও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সেটা সঠিক নয়। রেড জোনের জন্য ছুটির প্রজ্ঞাপন ও অন্যান্য পালনীয় বিষয় সম্পর্কে নতুন নির্দেশনা থাকবে। সাধারণ ছুটি তুলে নেওয়ার পর সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলো এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন এই তিনটি জোনে ভাগ করার উদ্যোগ নেওয়া হয় চলতি মাসের শুরুতেই। এরপর থেকেই গত ১৪ দিনে এ নিয়ে বহু মিটিং হয়েছে। এসব মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন স্বাস্থ্য অধিদফতর রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোন চিহ্নিত করার কাজ করছে। যেসব এলাকায় ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে সেসব এলাকাকে চিহ্নিত করে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এলাকাগুলোকে লকডাউন করা হবে। ইতিমধ্যে সরকারের স্বাস্থ্য, আইসিটি, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন রেড জোন এলাকা লকডাউনের বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গতকাল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা এখনো জোন ভাগ করার কাজ করছি। আরও কিছুটা সময় লাগবে। জোন ভাগ করা চূড়ান্ত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে ঢাকার কোন কোন এলাকা রেড জোনের আওতায়। এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন গতকালও বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, আমরা এখনো স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে রেড জোন বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু পাইনি। তিনি বলেন, রেড জোন ঘোষণার পর কমপক্ষে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগবে ওই এলাকা লকডাউন করতে। কারণ, অনেক প্রস্তুতির ব্যাপার। মানুষের খাবার, চিকিৎসাসহ যাবতীয় বিষয়ে একটা ব্যাপক প্রস্তুতি লাগবে। ছুটির বিষয়ে তিনি আবারও বলেছেন, যেসব এলাকা লকডাউন করা হবে সেসব এলাকায় বসবাসকারি সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবেন। শুধু জরুরি সেবা বাদে। এদিকে রেড জোন এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হলেও গতকাল বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ১৭ এবং দক্ষিণ সিটির ২৮টি এলাকা আছে। একইভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১১টি এলাকাকে রেড জোন করা হয়েছে।

আর ঢাকার বাইরে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার একাধিক উপজেলাকে রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৭টি রেড জোন হচ্ছে-বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গুলশান, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রায়েরবাজার, রাজাবাজার, উত্তরা, মিরপুর।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৮টি রেড জোন এলাকা হচ্ছে-যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, আজিমপুর, বাসাবো, শান্তিনগর, পল্টন, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলী, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, পরিবাগ, কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, লক্ষ্মীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড ও সেগুনবাগিচা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রেড জোনভুক্ত ১১ এলাকা হচ্ছে-চট্টগ্রাম বন্দরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, পতেঙ্গার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড, পাহাড়তলীর ১০ নম্বর ওয়ার্ড, কোতোয়ালির ১৬, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড, খুলশীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড, হালিশহর এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরের তিন জেলার মধ্যে গাজীপুরের সব কটি উপজেলাকে রেড জোনের আওতার মধ্যে আনা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সদর এবং পুরো সিটি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবং নরসিংদীর সদর মডেল থানা, মাধবদী ও পলাশ এলাকা হচ্ছে রেড জোন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর