বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

পাওয়া গেল করোনার জীবন রক্ষাকারী প্রথম ওষুধ

প্রতিদিন ডেস্ক

বিজ্ঞানীরা বলছেন ডেক্সামেথাসন নামে সস্তা ও সহজলভ্য একটি ওষুধ করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করবে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই স্বল্প মাত্রার স্টেরয়েড চিকিৎসা একটা যুগান্তকারী আবিষ্কার। বিবিসি এই ওষুধ ব্যবহার করলে ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি এক-তৃতীয়াংশ কমানো যাবে। আর যাদের অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার এক-পঞ্চমাংশ কমানো যাবে। বিশ্বে এই ওষুধ নিয়ে সর্ববৃহৎ যে ট্রায়াল বা পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল তার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছিল এই ওষুধ করোনাভাইরাসের চিকিৎসায়ও কাজ করবে কিনা। গবেষকরা অনুমান করছেন ব্রিটেনে যখন করোনা মহামারী শুরু হয় তার প্রথম থেকেই যদি এই ওষুধ ব্যবহার করা সম্ভব হতো তাহলে পাঁচ হাজার পর্যন্ত জীবন বাঁচানো যেত। কারণ এই ওষুধ সস্তা। তারা বলছেন, বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় এই ওষুধ বিশালভাবে কাজে লাগতে পারে এবং যেসব  দেশ রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে এটা তাদের জন্য বিরাট সুখবর। কভিড চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের অনুমোদন বাতিল : কভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের জরুরি চিকিৎসা হিসেবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং ক্লোরোকুইনের ব্যবহারের অনুমোদন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ)। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

করোনার চিকিৎসা হিসেবে প্রায়ই এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি তিনি নিজে করোনার প্রতিষেধক হিসেবে নিয়মিত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ খাচ্ছেন বলে দাবি করেন। তবে এফডিএ এবার এই ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন বাতিল করল। গত সোমবার এফডিএ তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানায়, এ বিষয়ে বর্তমান গবেষণা পর্যালোচনা করে এফডিএ স্থির করেছে যে ওষুধগুলো জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের ‘সংবিধিবদ্ধ মানদ-’ পূরণ করে না। কারণ, সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে এটা বলা যায়, এই ওষুধগুলো কভিড-১৯ এর চিকিৎসায় কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম।

 

এফডিএর প্রধান বৈজ্ঞানিক ডেনিস হিস্টন এ বিষয়ে গতকাল বায়োমেডিকেল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিএআরডিএ) গ্যারি ডিসব্রোকে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘নতুন তথ্য এবং অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এফডিএ স্থির করেছে যে, এইচসিকিউ এবং সিকিউর মৌখিক ব্যবহার কভিড-১৯ এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে, তা বিশ্বাস করা আর যৌক্তিক নয়। তাই এফডিএ কভিড-১৯ এর চিকিৎসায় এইচসিকিউ এবং সিকিউর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন বাতিল করছে। এই চিঠির তারিখ থেকে এইচসিকিউ এবং সিকিউ মুখে খাওয়া আর এফডিএ দ্বারা কভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য অনুমোদিত নয়।’ এফডিএ বলছে, করোনায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইনের ব্যবহারে হৃদযন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া আরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

রেমডেসিভির দেওয়া হচ্ছে এমন রোগীদের ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে এফডিএ। রেমডেসিভির করোনার চিকিৎসায় অনুমোদিত ওষুধ। তবে রেমডেসিভিরের সঙ্গে ওই দুই ওষুধ খেলে রেমডেসিভিরের কার্যকারিতা কমতে পারে।

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন মূলত ম্যালেরিয়ার ওষুধ। এ রোগের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ নিরাপদ। কিন্তু করোনার চিকিৎসায় এই ওষুধের কার্যকারিতা এখনো প্রমাণিত হয়নি। সম্প্রতি ল্যানসেটের এক গবেষণায় বলা হয়, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের কোনো উপকারিতা নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও ট্রাম্প করোনার প্রতিষেধক হিসেবে নিয়মিত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ খাচ্ছেন। কারণ, তিনি মনে করেন, এই ওষুধ ভালো। এই ওষুধ সম্পর্কে অনেক ভালো কথা শুনেছেন তিনি। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সঙ্গে জিঙ্কও খাওয়ার কথা জানান ট্রাম্প।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর