শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বাংলাদেশ

২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ মৃত্যু আক্রান্ত ৩২৪৩

বিশেষ প্রতিনিধি

দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বাংলাদেশ

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় এখন বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। প্রথম অবস্থানে ভারত। এর পরের অবস্থানে পাকিস্তান। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের অবস্থান পুরো বিশ্বে ১৬তম। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন হাজার ২৪৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। দেশে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৫ হাজার ৫৩৫ জন। আর ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৩৮৮ জনে। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৭৮১ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪২ হাজার ৯৪৫ জন।

ভারতে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা তিন লাখ ৮১ হাজার ৪৮৫ জন। আর মারা গেছেন ১২ হাজার ৬০৫ জন। পাকিস্তানে শনাক্তের সংখ্যা এক লাখ ৬৫ হাজার ৬২ জন। আর মারা গেছেন চার হাজার ৯৪৪ জন। গতকাল করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নুমনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৩২৭টি। ৬১টি পরীক্ষাগারে ১৫ হাজার ৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট পরীক্ষা হলো পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৮টি। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৬৯ শতাংশ, মৃতের হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে পুরুষ ৩২ জন, নারী ১৩ জন। বয়স বিভাজনে ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে চারজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে চারজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে তিনজন। তাদের মধ্যে ২১ জন ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, চারজন ময়মনসিংহ বিভাগের, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের দুজন করে, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের একজন করে বাসিন্দা ছিলেন।

এদিকে সারা দেশের কোথায় কোথায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন তার সর্বশেষ খবর জানিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা : দিনাজপুর : জেলায় নতুন করে চিকিৎসক, একই পরিবারের চারজনসহ আরও ১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে দিনাজপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪৬৯ জন। যার মধ্যে পুরুষ ৩৩৩ , নারী ১১৩ ও শিশু ২৩জন রয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন সাতজন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জন সুস্থসহ এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯৭ জন। এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আবদুল কুদ্দুছ। নোয়াখালী : জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৫১ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৩২ জনে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩৯ জন।  সুস্থ হয়েছেন ৫৫৪ জন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার জানান, গত ১৬ ও ১৭ জুন সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষার জন্য আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) করোনা ল্যাবে পাঠানো হয়। পরে ১৮ জুন রাতে তাদের রিপোর্ট আসলে তাতে ৫১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলায় নতুন করে আরও ১০৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটিই জেলায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। এ নিয়ে জেলায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫১১ জনে। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ৪৭৮ জনের নমুনার পরীক্ষার ফল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসে। এদের মধ্যে ১০৫ জনের নমুনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ৪৭ জন, কসবায় ৩৭ জন, বিজয়নগরে দুজন, আশুগঞ্জে চারজন, সরাইলে আটজন এবং নবীনগর উপজেলায় সাতজন রয়েছেন। ময়মনসিংহ : জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজন মারা গেছেন। এনিয়ে জেলায় করোনায় ১৫ জনের মৃত্যু হলো। এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন একহাজার ২০৪ জন। ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. এ বি এম মসিউল আলম জানান, নান্দাইলের পাঁচরুখি গ্রামের মোরসালিন গতকাল সন্ধ্যায় নগরীর এস কে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শুক্রবার ভোরে মারা যান। নগরীর সেহড়া এলাকার মরিয়ম বেগম নামে এক বৃদ্ধা গত শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে এস কে হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হন। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন। গফরগাঁও উপজেলার মুখি মমজান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাকসুদা জাহান মুর্শিদীকে এস কে হাসপাতাল থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি। মাগুরা : জেলায় নতুন করে আরও দুজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৩৪ জন। নীলফামারী : নীলফামারীতে নতুন করে আরও ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. রনজিৎ কুমার বর্মন জানান, দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো ২৮টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। এতে দেখা যাচ্ছে ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুনামগঞ্জ : জেলায় নতুন করে আরও ৪৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫৪ জনে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন জানান, করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত জেলায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সুস্থ হয়েছেন ১৬১ জন। গাজীপুর : গাজীপুরে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ জন। এ নিয়ে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ৬৭৩ জনে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৮৮ জনের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও সদরে ৪৬ জন, কালিয়াকৈরে ১৬ জন, কালীগঞ্জে ১৫ জন, কাপাসিয়ায় তিনজন ও শ্রীপুর উপজেলায় আটজন রয়েছেন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৮ জন। নাটোর : জেলায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১৬ জন। সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায় নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নাটোর সদরে ১০ জন, বাগাতিপাড়ায় পাঁচজন, সিংড়ায় একজন, বড়াইগ্রামে তিনজন ও লালপুরে একজন রয়েছেন। টাঙ্গাইল : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মির্জাপুরে ১৫ জন, টাঙ্গাইল সদরে তিনজন, সখীপুর ও ধনবাড়িতে একজন করে রয়েছেন। এ নিয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মোট ৩৯৯। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন একজন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট মারা গেছেন ৯ জন।

সর্বশেষ খবর