বুধবার, ২৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা

শামীম আহমেদ

করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। দৈনিক করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে সাড়ে তিন হাজারের উপরে। ঈদের পর থেকেই হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্বের ১৭০টিরও বেশি দেশকে পেছনে ফেলে আক্রান্তে শীর্ষ সারিতে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। মৃত্যুর সারিও দ্রুত দীর্ঘ হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের ৮০ ভাগ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে। মৃত্যুর হারও বেড়ে যাবে।

গতকাল ভাইরোলজিস্ট ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। সঙ্গে মাস্ক নিয়ে ঘুরলেও তা পরছেন না। এখন তো দৈনিক নমুনা পরীক্ষায় ২২-২৩ শতাংশ মানুষের করোনা পজেটিভ পাওয়া যাচ্ছে। এর অর্থ হলো পরীক্ষা না হওয়া অনেক সংক্রমিত মানুষ সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নিজের অজান্তেই রোগ ছড়াচ্ছেন। এ ছাড়া এখন তো অনেক আক্রান্তেরই উপসর্গ প্রকাশ পাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে না পারলে করোনাভাইরাস আপনা-আপনি চলে যাবে না। অনেক মানুষ আক্রান্ত হবে, মারা যাবে। দীর্ঘদিন এর ঘানি টানতে হবে। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও হেলথ এন্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চলতি জুন মাসে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। এর জন্য গত ঈদে মানুষের গ্রামের বাড়িতে ছুটে যাওয়াও অনেকাংশে দায়ী। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে ঈদটা যে যেখানে ছিল সেখানেই উৎযাপন করা দরকার ছিল। সামনে কোরবানির ঈদ। এই ঈদকে কেন্দ্র করে এখানে সেখানে পশুর হাট বসলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আমরা সময় পেয়েছি কিন্তু বাধা দিতে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলার দরকার ছিল সেটা পারিনি। চীনা বিশেষজ্ঞ দল তো বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জানিয়ে দিয়েছে, এখানে সমস্যা চিকিৎসায় নয়, সমস্যা অদক্ষতায়। এখন জোন করা হয়েছে। লকডাউন হচ্ছে। কিন্তু রেডজোনের সব মানুষের পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় শুধু জোনিং ও লকডাউন করলে কোনো কাজ হবে না। এদিকে মহামারী বিশেষজ্ঞ ও রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্ক পরছেন না। পরলেও কথা বলার সময় নামিয়ে কথা বলছেন। কথা বলার সময় মাইক্রো ড্রপলেটের মাধ্যমে দ্রুত করোনা ছড়ায়। এ বিষয়গুলো সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও ভাবতে হবে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। পরিবারের সুরক্ষায় বাইরে থেকে এসে কোনো কিছু ধরার আগে গোসল করতে হবে। কিছু ধরলে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। হাত থেকেই নাক, মুখ, চোখে ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায়।

 

সর্বশেষ খবর