বুধবার, ২৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের জন্য কাজ করছে আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের জন্য কাজ করছে আওয়ামী লীগ

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের জন্য কাজ করছে। আওয়ামী লীগের সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে যে অর্জন তা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে গতকালের বৈঠকে আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় সংসদের বৈঠক শুরু হয়। অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়। সংসদ নেতা শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে মুজিববর্ষের কর্মসূচির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি সীমিত করার কথা তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী একটি সমস্যা। এর   থেকে মানুষকে রক্ষা করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, মানুষ যাতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়, সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি রেখেই মুজিববর্ষ উদযাপনের সব কর্মসূচি স্থগিত করেছি। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিশেষভাবে উদযাপনের কথা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটাও করতে পারলাম না। কারণ আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের কল্যাণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এ কারণে লোক সমাগম হতে পারে এমন সব কর্মসূচি আমরা বাতিল করেছি । কারণ আমাদের কাছে জনগণের কল্যাণই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, জাতির পিতা রাষ্ট্র পরিচালনার যখন দায়িত্ব পেলেন, যুদ্ধ-বিগ্রহ দেশটিকে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক সে সময় আরেক মীরজাফর মুশতাক এবং জিয়ার চক্রান্তে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের জন্য কাজ করে। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশের মানুষ কিছু পেয়েছে।  মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের প্রতিজ্ঞা এদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব। মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাব। আজকের দিনে জাতির পিতার কাছে এটাই আমাদের অঙ্গীকার। তিনি বলেন, জাতির পিতা আজ শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার যে আকাক্সক্ষা তা আমাদের পূরণ করতে হবে। তার অস্তিত্ব আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আছে। এক সময় তাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু মুছে ফেলা যায়নি। সত্যকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায় না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটিয়ে বাংলার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, সেই স্বাধীনতার সূর্যকে উদিত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৭৫৭ সালে ২৩ শে জুন পলাশীর আম্রকাননে সিরাজউদ্দৌলা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে যুদ্ধে হেরে যায়। সেখানে মীর জাফর আলী খান বেইমানি করেছিল। ফলে এই পতন ঘটে। তখন সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলা উড়িষ্যাসহ এই অঞ্চলের শাসক। সেই স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল পলাশীর আম্রকাননে। আর ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ২৩ জুন বাংলার যে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল সেই আম্রকাননে কিন্তু প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্রের সরকার গঠিত হয়। পলাশীর প্রান্তরে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেই সূর্য উদিত হয়েছে ১৯৭১ সালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা ছয়দফা দিলেন। তাকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জড়ানো হলো। বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করল। সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাংলাদেশিরা ক্ষমতায় আসুক এটা চায়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নির্বাচনের মাধ্যমে চেয়েছিলেন এ দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার। ভোটের মাধ্যমে তিনি সেটি নির্ধারণ করতে চেয়েছিলেন। আমরা তার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে যে অর্জন সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। জাতি  স্বাধীন হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওয়া। তিনি বলেন, আমি জাতির পিতার প্রতি সম্মান জানিয়ে এটুকু বলব, তিনি আজীবন মানুষের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। জনগণের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি তার সংগ্রামের পথে অনেক বাধা, বিঘ্ন অতিক্রম করেছেন। তিনি ভাষা আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পাই। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে জীবন দেওয়া নেতা-কর্মীদের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

সর্বশেষ খবর