বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
রংপুর

বাড়তি টাকা দেন ৯৬ শতাংশ রোগী

নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুরে করোনা আক্রান্ত মাত্র ৪ শতাংশ রোগী সরকারি হাসপাতালের কিছুটা সুযোগ-সুবিধা পেলেও বাকি ৯৬ শতাংশ রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে বাইরে থেকে কয়েক গুণ বেশি দামে ওষুধ কিনে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ কিনতে গিয়ে অনেকেই হোঁচট খাচ্ছেন। কারণ সরকারি মূল্য থেকে কয়েক গুণ বেশি দামে ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের। বাজার মনিটরিং না থাকায় এমনটা হচ্ছে। বাড়তি দামের কারণে চিকিৎসার জন্য অনেক রোগীকেই হাত পাততে হচ্ছে অন্যের কাছে। অনেকে ধার করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সুস্থ হওয়ার পর দেনার টাকা কীভাবে শোধ করবেন এ নিয়ে চিন্তিত অনেকে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের বেশি নেওয়ার বিধান নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে রংপুরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় করোনা পরীক্ষা কিংবা চিকিৎসার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৩ জন। এর মধ্যে করোনা ডেলিকেডেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মাত্র ৩৩ জন। বাকিরা বাড়িতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ মোবাইল ফোনে অথবা অন্য কোনো উপায়ে ওইসব রোগীর চিকিৎসা দেয়। চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী ওষুধ কিনতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন অনেকেই। রংপুর নগরের গুপ্তপাড়ার এক করোনা আক্রান্তের ২৮ মে নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসে এবং ২০ জুন তিনি সুস্থ হন। তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তিনি জানান, ওষুধ কিনতে গিয়ে অনেক দেনা হয়েছেন। এখন দেনা শোধ করবেন কীভাবে এ নিয়ে চিন্তিত। সাতমাথা এলাকার রোগী করোনা ডেলিকেডেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি জানান, হাসপাতালে সাপ্লাই না থাকায় কয়েক হাজার টাকার ওষুধ বেশি দামে বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। করোনা রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অ্যান্টিভাইরাস ইনজেকশন ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া ফেভিপাইবানিট-জাতীয় ট্যাবলেট প্রতিটি ৪০০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। ওই ট্যাবলেট রোগীভেদে ৫০ থেকে ৬৫টি লাগে। সে হিসেবে ২৫ হাজার টাকার ওপর ওই ট্যাবলেটই লাগে। তবে করোনা ডেলিকেডেট হাসপাতালের পরিচালক ডা. নুরনবী জানান, তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয় না। যারা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ কিনতে হয়। ওষুধের দাম আকাশচুম্বীর বিষযে করোনা প্রতিরোধে রংপুরে গঠিত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, সরকারের মনিটরিং না থাকায় ফার্মেসিগুলো করোনা রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে তিনি ঔষধ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরন্ব কুমার রায় বলেন, নির্ধারিত মূল্যের বেশি নেওয়ার বিধান নেই। কোনো রোগী যদি অভিযোগ করেন তাহলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর