বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

কবি ও সাংবাদিক মাশুক চৌধুরী আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

কবি ও সাংবাদিক মাশুক চৌধুরী আর নেই

বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান বার্তা সম্পাদক ও বিশিষ্ট কবি মাশুক চৌধুরী (৭৩) আর নেই। মঙ্গলবার (২৩ জুন) দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মাশুক চৌধুরীর মৃত্যুতে বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সাংবাদিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি অর্জন শেষে সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন মাশুক চৌধুরী। সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেন। বাংলাদেশ প্রতিদিন ছিল তাঁর শেষ কর্মস্থল। গতকাল সন্ধ্যায় মাশুক চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনা করে বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পত্রিকাটির সম্পাদক নঈম নিজাম গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, মাশুক ভাইয়ের মতো গুণী মানুষের মৃত্যু অনেক বড় শূন্যতা তৈরি করল। সৃষ্টিকর্তা যেন তার পরিবারকে এ শোক সইবার সক্ষমতা দেন।

গত ১৬ জুন অসুস্থ হয়ে শাহজাহানপুরে প্যান প্যাসিফিক হাসপাতালে ভর্তি হন কবি ও সাংবাদিক মাশুক চৌধুরী। করোনা পরীক্ষার পর তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। মাশুক চৌধুরীর ছোটভাই আশরাফুল হায়দার চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টায় তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে। চিকিৎসকরা আইসিইউর জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলে তাকে রাশমনো হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত দেড়টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বুধবার সকাল ৭টায় হাজীপাড়ায় প্রথম দফা এবং উত্তর মাদারটেক বায়তুল্লাহ জামে মসজিদে দিতীয় দফা নামাজে জানাজা শেষে মাদারটেক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

মাশুক চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৬ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চান্দপুরে। মরহুম আলতাফুর রহমান চৌধুরী ও মরহুমা মীর আয়েশা বেগমের সাত মেয়ে ও চার ছেলের মধ্যে মাশুক চৌধুরী সবার বড়। কর্ম জীবনে তিনি গণকণ্ঠ, বাংলার মুখ, সংবাদ, খবর, দৈনিক দেশসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিন তার সর্বশেষ কর্মস্থল। সর্বদা প্রগতিশীল লেখালেখির সঙ্গে জড়িত প্রচারবিমুখ এই কবি কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৭ সালেই পান তিতাস সাহিত্য পুরস্কার। এ ছাড়া ইউনিসেফ স্বীকৃতি, লাল মোহন ফাউন্ডেশন পুরস্কার, জাতীয় প্রেস ক্লাব সম্মাননা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু-নাট্যম সংবর্ধনা, স্বাধীনতা সংসদ পুরস্কার, কবি ফজল শাহাবুদ্দীন স্মৃতিপদক, ঘাসফুল সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই কবি। তিনি বাংলা একাডেমির জীবন সদস্য, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ও জাতীয় প্রেস ক্লাব সদস্য কবিদের সংগঠন ‘কবিতাপত্র’র সম্পাদক ছিলেন। মাশুক চৌধুরীর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে বিখ্যাত কয়েকটি হলো : ‘মুক্তিযুদ্ধ প্রিয়তমা আমার’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘স্বর্গের রেপ্লিকা’, ‘অত্যাগসহন’ ও ‘নদীর নাম দুঃসময়’।

শোক : মাশুক চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। শোক জানিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু। শোক জানিয়েছে, বিএনপিপন্থী সাংবাদিক সংগঠন বিএফইউজে ও ডিইউজে। এছাড়া শোক প্রকাশ ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা।

শোক জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শোক প্রকাশ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। শোক জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদ নেতা নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর চরমোনাই ও মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল, গণদল চেয়ারম্যান এ টি ইউ গোলাম মাওলানা চৌধুরী ও মহাসচিব আবু সৈয়দ।

সর্বশেষ খবর