শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

কর্মী ছাঁটাই তো স্থায়ী কোনো সমাধান নয়

-ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম

কর্মী ছাঁটাই তো স্থায়ী কোনো সমাধান নয়

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে  বলেন, করোনা মহামারীর সংকট ঠেকাতে অনেক প্রতিষ্ঠানই কর্মীদের বেতন কমাচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও কস্ট কাটিংয়ের নামে কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে। এর কোনোটাই উত্তম কোনো সমাধান নয়। এতে সেসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কমে যাবে। সামগ্রিক কাজের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া এসব কোম্পানি কর্মী ছাঁটাই করে কত পরিমাণ টাকাই বা সাশ্রয় করবে সে সব নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। আবার যারা কাজ হারিয়ে ফেলছেন তারা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন। এখন তো নতুন করে কাজ পাওয়া একটা কঠিন বিষয়। নতুন তো কোনো কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে না। ফলে এটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। বরং অন্য অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে এনে সাশ্রয় হতে পারে। অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে যে চরম আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে, তার ব্যাপক প্রমাণ তো আমরা এবার পাচ্ছি। যেখানে কোনো রকম চিকিৎসাই নেই। মানুষ হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে অসহায় হয়ে মারা যাচ্ছে। এর শিকার নি¤œ ও মধ্যবিত্তের মানুষই বেশি। আবার এমন সংকটকালে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। যাতায়াত খরচ বেড়েছে। ওষুধের বাজারে তো কখনই কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। যে যার মতো দাম নিচ্ছে। হরহামেশা দাম বাড়াচ্ছে। এর চূড়ান্ত প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ের ওপর। ফলে মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। মানুষ এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এমন সংকট আর কখনো আসেনি। এর আগে যত দুর্ভিক্ষ, বন্যা, খরা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসেছে সেগুলোর প্রত্যেকটির একেকটা মাত্রা ছিল। কিন্তু এবারেরটা একেবাবেরই ভিন্ন। এটা বহুমাত্রিক সংকট তৈরি করছে। একদিকে মানুষ জীবন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কে কখন আক্রান্ত হবে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসা পাবে কি না এসব বিষয়। আবার অন্যদিকে এ সময়টায় তেমন কোনো কাজ নেই। তাই রোজগারও নেই। থাকলেও সেটা কমে যাওয়ায় জীবিকা নির্বাহ কীভাবে হবে। আবার করোনা পরবর্তী সময়ে যে সামাজিক সংকটটা দেখা দেবে সেটা নিয়েও এখন থেকেই ভাবতে হবে। ফলে সব মিলিয়ে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ এখন জীবন ও জীবিকার জন্য একটা অনিশ্চিত যুদ্ধ করছে। অর্থাৎ এ যুদ্ধে কে জয়ী হবে আর কে-ই বা হারবে। জয়ী হলেও করোনা পরবর্তী সময়টাতে কীভাবে সারভাইভ করবে এসব নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে চরম এক অনিশ্চয়তা কাজ করছে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর