শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

মহামারী নিয়ে দুর্নীতি করলে ক্ষমার অযোগ্য

-এম এ আজিজ

মহামারী নিয়ে দুর্নীতি করলে ক্ষমার অযোগ্য

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেছেন, দুঃখজনক হলো, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যুর হার বেশি। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশে চিকিৎসা সুরক্ষাসামগ্রীর মান নিয়ে  যথেষ্ট সন্দেহ আছে। চিকিৎসকরা যেসব সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছেন তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। তবে স্বাস্থ্য খাতে যারা দুর্নীতি বা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরুরি। একটি মহামারীতেও যারা দুর্নীতি করতে চায় তারা ক্ষমার অযোগ্য। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনও ঘোষণা দিয়েছে, স্বাস্থ্য খাতে কোথাও অনিয়ম পেলে তারা ব্যবস্থা নেবে। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। এম এ আজিজ বলেন, চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে যারা আইসিইউতে দায়িত্বে আছেন বা কভিড-১৯ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ আছে কিনা তাও পর্যবেক্ষণ জরুরি। এ ছাড়া চিকিৎসকরা পিপিই, মাস্ক বা সুরক্ষাসামগ্রী ঠিকমতো ব্যবহার করছেন কিনা, তারা কোথায় চা পান করেন, লেখালেখির জন্য খাতা-কলম, মোবাইল ব্যবহার করেন- সবকিছুই খেয়াল রাখতে হবে। এটা হলো সরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে। প্রাইভেট হাসপাতালগুলো আরও অনিরাপদ। সেখানে এসব দেখভালের কেউ নেই।

চিকিৎসক নেতা আজিজ বলেন, কভিড-নন কভিড হাসপাতালেই বেশি করোনা রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে নন কভিডেও আক্রান্তের হার কম নয়। নন কভিডে চিকিৎসকের কাছে অনেক রোগীই তার করোনা গোপন করেন। আবার এমনও আছে, রোগীরা জানেনও না তারা কভিড আক্রান্ত! এ ক্ষেত্রে নন কভিড হাসপাতালে যদি চিকিৎসকরা সুরক্ষাসামগ্রী পরিধান না করেন তাহলে তারাও আক্রান্ত হবেন। হচ্ছেনও। ওইসব চিকিৎসকের মাধ্যমেও আরও বড় পরিসরে করোনা ছড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী শতকরা ৪১-৪২ ভাগ করোনা ছড়ায় চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে। এসব কারণেই আমাদের দেশে চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের অনেক ভালো ভালো চিকিৎসক প্রাণ দিয়েছেন কভিডে। এ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এখানেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্ব আছে। অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে সুরক্ষাসামগ্রী দিচ্ছেন। আবার মন্ত্রণালয়ও বিভিন্ন স্থান থেকে কিনে আনছে। এর মান কেউ দেখছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনে এসব সুরক্ষাসামগ্রী তৈরি হয়েছে কিনা তাও দেখার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের। এখন সবচেয়ে জরুরি সুরক্ষাসামগ্রীর মান নিয়ন্ত্রণের। মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এটা। ইচ্ছা করলেই সুরক্ষাসামগ্রী দেওয়া যাবে না। অবশ্যই মান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। স্বাচিপ মহাসচিব বলেন, এগুলো আগে থেকেই দেখভালের দায়িত্ব ছিল। এত দিন হয়নি। তবে এখনই তা শুরু করতে হবে। ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধারা যদি হারিয়ে যান, তাহলে যুদ্ধ করবে কে? আমরা বিষয়টি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বলার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমরা তো আর সরকার নই। সরকারের নীতিনির্ধারকদের এটা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। তবে আমরা আশার আলো দেখছি, সরকার ব্যবস্থাও নিচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর