শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে পূর্ব রাজাবাজারের

লকডাউন চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

লকডাউনের পর করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারের। প্রথম ১৪ দিন এবং এরপর আরও ৭ দিন বাড়িয়ে এখনো লকডাউন অবস্থায় রয়েছে রাজধানীর এই এলাকাটি। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে লকডাউন। 

গতকাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, একটি প্রবেশ ও বহির্গমন রাস্তা বাদে বাকিগুলো গত দুই সপ্তাহের মতোই বন্ধ আছে। খোলা রয়েছে শুধু গ্রিন রোডমুখী গেটটি। এই গেট  দিয়ে জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। তবে কাউকেও নির্দিষ্ট জরুরি কারণ ছাড়া বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে থেকে ভিতরেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, পূর্ব রাজাবাজারে গত ৯ জুন রাত ১২টার পর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউন শুরুর সময় এ এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ছিলেন ৩১ জন। এরপর গত ২০ জুন পর্যন্ত উপসর্গ থাকা আরও ২০৫ জন নমুনা দেন। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ জন। বাকিদের নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, এই ৪০ জনের মধ্যে বেশিরভাগই আক্রান্ত হয়েছেন লকডাউনের শুরুর দিকে। পরের দিকে এসে আক্রান্তের হার অনেকটাই কমে এসেছে। এই পরিসংখ্যান থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা বলছেন, লকডাউন অনেকটাই কার্যকর হয়েছে বলেই আক্রান্তের পরিমাণ কমছে। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা আইসোলেশনে থাকায় বেশিরভাগের রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে বলে মনে করছেন তারা। জানা গেছে, প্রথম সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের শতকরা হার ছিল ১৯ শতাংশের মতো। শেষ পাঁচ দিনে তা ৯ শতাংশে নেমে আসে। অর্থাৎ আক্রান্তের হার শুরুর তুলনায় শেষের দিকে কমে আসছে, যা আশাব্যাঞ্জক। প্রয়োজনীয়তা যাই হোক না কেন, রেড জোনে লকডাউনের মধ্যে যারা বাস করছেন, তাদের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখতে ২৪ ঘণ্টাই কাজ করে যাচ্ছেন ২০০ স্বেচ্ছাসেবী। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা জোনভিত্তিক ভাগ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, স্থানীয়রা ও স্বেচ্ছাসেবকরা মিলে ওই এলাকার মানুষদের সহায়তা করছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য টহল দিচ্ছেন সেনাবাহিনীও। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান ইরান জানান, এই এলাকায় বাসিন্দাদের খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো দিতে দুই শিফটে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বাসিন্দাদের ফোন নম্বরও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। মাঝেমধ্যে তাদের অনেকে আমাদের সঙ্গে ঠাট্টা করলেও আমরা হাসিমুখেই তাদের জন্য কাজ করছি। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা যে সচরাচর ঘটছে, তা নয়। তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষ তাদের প্রয়োজনেই সাহায্য চায়। কিছু মানুষ মজা করার জন্য ফোন করে। তবে আমরা তাদের প্রয়োজনগুলোও গুরুত্ব দিয়েই নেই।’ ক দিন আগে ৮০ বছর বয়সী একজনের কাছ থেকে ফোন পান সুজন। ওই ব্যক্তি জানান, তার জ্বর আছে ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা তাকে একটি কক্ষে বন্ধ করে রেখেছেন। বিষয়টি জানার পর স্বেচ্ছাসেবকরা সেখানে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর